বৃক্ষরোপণ কিংবা গাছের পাট্টা বিলি কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরে প্রায় কোটি টাকা ‘জলে’ যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পঞ্চায়েতে নিজস্ব নার্সারি তৈরি বাধ্যতামূলক করা হল। এর পর থেকে বাইরের কোনও এজেন্সি বা নার্সারি থেকে আর গাছের চারা কেনা যাবে না।
হুগলি জেলায় এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে চলতি এপ্রিল মাসের গোড়া থেকে। ১০০ দিনের প্রকল্পে প্রতিটি পঞ্চায়েতে নার্সারি তৈরি করবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। প্রকল্পের হুগলি জেলা নোডাল অফিসার কমলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘অতীতের নার্সারি প্রকল্প রূপায়ণের রীতি বদলে নতুন প্রকল্পে সরকারি অর্থ অপচয় যেমন রোখা যাবে, তেমনি মেয়েদের স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে ভীষণ কার্যকর হবে।’’জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতের নিজস্ব নার্সারি প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি চারা বিপণনের সমস্যা থাকছে না। প্রতি পঞ্চায়েত এলাকায় ৪ কাঠা জমির উপর তৈরি নার্সারিতে ২০ হাজার চারা তৈরি হবে। সেই চারা তৈরির জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী পাবে ১৮০ টাকা করে ২৬৭টি শ্রমদিবসের মজুরি। অর্থাৎ ৪৮ হাজার ৬০ টাকা। কোনও গোষ্ঠী তাঁদের ব্যক্তিগত ৪ কাঠা জমিতে নার্সারি করলে ওই মজুরি তো পাবেনই, এ ছাড়া মোট চারার ২৫ শতাংশ পঞ্চায়েতকে বিক্রি করতে পারবেন।
নার্সারি প্রকল্পে অতীতে সাফল্য না মেলার প্রশ্নে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ, “সেসময় গোষ্ঠীর তৈরি চারাই যে পঞ্চায়েতকে কিনতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। পঞ্চায়েত তাদের চারা না কিনে বাজার থেকে চারা কিনে বনসৃজন করেছে বলে খাতায় কলমে দেখালেও আদতে কোনও গাছই লাগায়নি। সরকারি টাকা নষ্ট হয়েছে।’’
অনেক পঞ্চায়েতের দাবি, গোষ্ঠীগুলির কাছ থেকে চারা কেনার কোনও প্রস্তাব আসেনি। তাদের কাছে চারা কিনতে হবে বলে কোনও নির্দেশিকাও ছিল না। সর্বোপরি গোষ্ঠীগুলির শ্রমদিবস নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু আদৌ চারা তৈরি করেনি। তবে এবার নতুন ভাবে প্রকল্প রূপায়ণে দুপক্ষই আশাবাদী।