তৃণমূল শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েতে উন্নয়নের হাল দেখতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা। কেন্দ্রীয় পরিদর্শকদের ঘুরিয়ে দেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিরোধী দলনেতাকেই। কেন্দ্রীয় দলকে তিনি ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন কী কী কাজ তাঁর এলাকায় হয়েছে। উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতে এই ছবি দেখা গিয়েছিল গত নভেম্বর মাসে
এরপর কেটে গিয়েছে চার মাস। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর ঘোষণা করেছে ‘পঞ্চায়েত স্বশক্তিকরণ’ প্রকল্পে চণ্ডীপুর হাওড়া জেলায় সেরার শিরোপা পেয়েছে। আগামী ২৪ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক অনুষ্ঠানে চণ্ডীপুরের প্রধানের হাতে তুলে দেওয়া হবে ওই পুরস্কার। সম্মান প্রাপ্তিতে খুশি পঞ্চায়েতের শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষই। প্রধান সুমিত্রা রং বলেন, ‘‘উন্নয়নমূলক কাজে আমরা রাজনীতি করিনি। যেখানে প্রয়োজন সেখানেই ঝাঁপিয়েছি।’’ বিরোধী দলনেতা মানব মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘সব কাজ যে এখানে ঠিকমতো হচ্ছে সে কথা বলব না। তবে তার জন্য আমরা বিরোধী দল হিসাবে প্রথা মেনে আন্দোলন করেছি। কিন্তু উন্নয়ন বন্ধ হতে দিইনি। এই পুরস্কারে আমরা বিরোধী দল হিসাবেও গর্বিত।’’
প্রতিবছর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর সেরা গ্রাম পঞ্চায়েতকে পুরস্কার দেয়। সে জন্য যে বছর পুরস্কার দেওয়া হয় তার আগের আর্থিক বছরে পঞ্চায়েতগুলি কী কী কাজ করেছে তার খতিয়ান নেয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর। চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ২০১৭ সালে। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে তাদের রাজের ভিত্তিতে।
এর জন্য কেন্দ্রের ৪৩টি বিষয়ে প্রশ্ন ছিল। রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, শুধু খরচের নিরিখেই নয়, নিজস্ব আয় বৃদ্ধি, সচেতনতামূলক কাজ, নিয়মিত গ্রাম সংসদের বৈঠক হয়েছে কিনা সমস্ত কিছু বিচার করেই পুরস্কার দেওয়া হয়। চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, তারা কেন্দ্রের দেওয়া বিভিন্ন খাতের টাকা যেমন খরচ করেছে, তেমনই নিজস্ব আয়ও বাড়িয়েছে। পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় বছরে ১৪ লক্ষ টাকা। ওই টাকায় নলকূপ মেরামত, ছোটখাটো রাস্তা সংস্কার প্রভৃতি কাজ তারা করে থাকে। বাল্যবিবাহ রোধে নিয়মিত প্রচার চালানো হয়। যক্ষ্মা আক্রান্তদের দেওয়া হয় বিনামূল্যে পুষ্টিকর খাবার।
চন্ডীপুর পঞ্চায়েতে মোট ২২টি গ্রাম সংসদ আছে। পঞ্চায়েতের ২২ জন সদস্যের মধ্যে বিরোধী আছেন সিপিএমের ৮ জন। প্রধান বলেন, ‘‘যে টাকা আসে তা সব বুথে সমান ভাগ করে দেওয়া হয় না। তাতে কোনও কাজ ঠিকমতো হয় না। বিরোধীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে যে সব কাজ গুরুত্বপূর্ণ সেইগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা হয়। তার ফলে উন্নয়নও ভাল হয়।’’