সময়ের তিন বছর পরেও শেষ হল না কাজ

জবরদখলে আটকে রাস্তা সম্প্রসারণ

চার বছর পরেও শেষ হল না হাওড়ায় মুম্বই রোড সম্প্রসারণের কাজ। জাতীয় সড়ক সংস্থার অভিযোগ, জবরদখলের জন্য সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা যায়নি। শুধু তাই নয়।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৯
Share:

বেদখল: রানিহাটিতে মুম্বই রোডেই বসেছে বাজার।

কাজ শুরু হয়েছে ২০১০ সালে। কাজ শেষের কথা ছিল ২০১৪ সালে। অথচ চার বছর পরেও শেষ হল না হাওড়ায় মুম্বই রোড সম্প্রসারণের কাজ। জাতীয় সড়ক সংস্থার অভিযোগ, জবরদখলের জন্য সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা যায়নি। শুধু তাই নয়। ওই জবরদখনই স্থানীয় নিকাশি সমস্যা সমাধানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠকে জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক সংস্থার কর্তারা। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা প্রশাসন কর্তারাও।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, মুম্বই রোড সংলগ্ন ব্লকগুলির সঙ্গে আলাদা করে জাতীয় সড়ক সংস্থার কর্তারা বৈঠক করবেন। পরবর্তী পর্যায়ে কোথায় কোথায় জবরদখলকারীদের জন্য কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছে তা যৌথভাবে জাতীয় সড়ক সংস্থা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তারা সরেজমিনে দেখবেন। তার আগে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে মানচিত্র এনে জাতীয় সড়ক সংস্থার জমির সীমানা কোথায় শেষ হচ্ছে তা দেখে নেওয়া হবে।পরিদর্শনের রিপোর্ট পাওয়ার পরে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে পরিকল্পনা করা হবে। ইতিমধ্যে বালি-জগাছা, ডোমজুড় এবং বাগনান-১ ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে পাঁচলার সঙ্গে বৈঠক।

২০১০ সালে ডানকুনি থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত মুম্বই রোড ছয় লেনে সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের মধ্যে। ডোমজুড়ের অঙ্কুরহাটি, পাঁচলার রানিহাটি, উলুবেড়িয়ার পাঁচলা মোড়, নিমদিঘি, বাগনান প্রভৃতি জায়গায় আন্ডারপাস এবং উড়ালপুল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ এখনও শেষ হয়নি। যে সার্ভিস রোড হওয়ার কথা ছিল, সেই কাজও শুরু হয়নি। ফলে নিত্য দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে।

Advertisement

মুম্বই রোড যখন দুই লেনের ছিল, তখন রাস্তার দুই দিকে নয়ানজুলি ছিল। ফলে গ্রাম এবং রাস্তার জল বর্ষার সময়ে নয়ানজুলিতে পড়ত। ২০০৬ সালে এই রাস্তা চার লেনে সম্প্রসারিত হওয়ার সময়েই নয়ানজুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, নয়ানজুলি বোজানো হলেও বেশিরভাগ জায়গায়তেই বিকল্প নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলেনি জাতীয় সড়ক সংস্থা। ফলে বর্ষার সময়ে ভোগান্তি হয় বাসিন্দাদের। বিশেষ করে সলপ, রানিহাটি, পাঁচলা, বাগনান প্রভৃতি জায়গায় দিনের পর দিন জল জমে থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জাতীয় সড়ক সংস্থার গাফিলতির জন্য এমন ভোগান্তি। এমনকী জাতীয় সড়ক সংস্থার কাছে সমস্যার কথা জানালেও কোনও প্রতিকার হয়নি বলে অভিযোগ।

জাতীয় সড়ক সংস্থার অবশ্য দাবি, সার্ভিস রোড হলে তার পাশ দিয়ে নিকাশি ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু জমি জবরদখল হয়ে যাওয়ায় কোনও সার্ভিস রোডই তৈরি করা যায়নি। রানিহাটিতে রাস্তার উপরে আস্ত বাজার বসে। একই অবস্থা অঙ্কুরহাটিতে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জাতীয় সড়ক সংস্থাকে বলা হয়েছে মুম্বই রোডের ধারে যেখানে যেখানে নয়ানজুলি ছিল সেখানে বিকল্প নিকাশি ব্যবস্থা করে দিতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় সড়ক সংস্থার পক্ষ থেকে এর জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে দিল্লিতে দরবারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ওই কর্তার বক্তব্য, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যদি অতিরিক্ত টাকা চেয়ে জাতীয় সড়ক সংস্থার স্থানীয় কর্তারা দিল্লিতে দরবার করেন তা হলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সুপারিশের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে।’’ জাতীয় সড়ক সংস্থার ‘কলকাতা প্রকল্প রূপায়ণ’ বিভাগের অধিকর্তা অজিত সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘জবরদখল উচ্ছেদ না করলে টাকার দরবার করে কী হবে? আগে জমি হাতে পাই। তারপরে তো টাকা চাওয়ার প্রশ্ন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement