জলের দাবিতে পথ অবরোধ করায় এ বার কাউন্সিলরের শাসানি ও হুমকি শুনতে হল বলে অভিযোগ করলেন হাওড়ার বাসিন্দারা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকার ‘বি’ রোডে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অবরোধ চলার সময়ে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর দলের লোকজন এসে অবিলম্বে অবরোধ না তুললে মারধর করা হবে বলে শাসিয়ে যান। এমনকী পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকিও দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। অভিযোগের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই তৃণমূল কাউন্সিলর পম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেলগাছিয়ায় পাইপ ফেটে যাওয়ায় গত চার-পাঁচ দিন ধরে ঠিক মতো জল সরবরাহ হচ্ছিল না গোটা উত্তর হাওড়ায়। বেলগাছিয়ার বি রোডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনিতেই গত চারদিন ধরে জল ছিল না। তার উপরে শুক্রবার সকালে সর্বত্র জল এলেও ছিঁটেফোঁটা আসেনি বি রোড এলাকায়। জলের গাড়িও পাঠায়নি পুরসভা। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক লিলুয়া স্টেশন রোড ও বি রোডের মোড় বাঁশ-লাঠি-চেয়ার দিয়ে আটকে অবরোধ করেন এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থলে আসেন কাউন্সিলর পম্পাদেবী। আসে পুলিশ বাহিনীও।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কাউন্সিলর তাঁদের জানান, জল না আসতেই পারে কিন্তু বিক্ষোভ করা যাবে না। এর পরে পুলিশের সামনেই কাউন্সিলর তাঁদের মারধরের হুমকি দেন এবং তাঁর লোকজনই কার্যত গায়ের জোরে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে হটিয়ে দেন। ফেলে দেওয়া হয় বাঁশের ব্যারিকেড। ঘটনার সময়ে পুলিশ শুধুই নীরব দর্শক ছিল বলে অভিযোগ।
এলাকার এক বাসিন্দা শুভ্রা নাথ বলেন, ‘‘এ দিন অন্য জায়গায় জল এলেও আমরা পাইনি। তারই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। উল্টে কাউন্সিলরই লোকজন নিয়ে ছুটে এসে আমাদের মারধর করা হবে বলে শাসাতে শুরু করেন এবং গায়ের জোরে অবরোধ তুলে দেন।’’ এ দিনের অবরোধে সামিল এলাকার অন্য এক বাসিন্দা সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই অবরোধে সামিল হয়েছিলেন। অথচ কাউন্সিলর আমাদের কথা শোনার প্রয়োজন মনে করেনি। উল্টে মারধরের, গ্রেফতারের হুমকি দিয়েছেন।’’
এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর পম্পাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘অবরোধকারীদের কোনও ভাবে শাসানো হয়নি। কিছু লোক মিথ্যে কথা রটাচ্ছে। জলের গাড়ি পাঠানোর কথা দিলে অবরোধকারীরা নিজেরাই অবরোধ তুলে নেন।’’
হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবে এটা ঠিক, বেলগাছিয়া পাইপলাইনে কাজ চলার জন্য জল সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাই ওই এলাকায় সকালে জল পৌঁছয়নি। কিন্তু বেলায় পর্য়াপ্ত জলের গাড়ি পাঠানো হয়েছে। পাইপ লাইনে জল সরবরাহও করা হয়েছে।’’ মেয়র জানান, উত্তর হাওড়ায় ফের যাতে না সমস্যা হয় তাই পাইপ লাইন সারাইয়ের কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। উত্তর হাওড়ায় এখন তিন বারের জায়গায় দু’বার জল সরবরাহ করা হবে বলে জানান তিনি।