দু’ধারে ট্রাক-লরির সারি, রাস্তা জুড়ে ইট-বালি

অহল্যাবাঈ রোডে বাড়ছে দুর্ঘটনা, মৃত্যু

প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাণহানি হচ্ছে। তবু বেপরোয়া গতিতে ছুটছে যানবাহন। রাস্তার ধারে ইমারতি সরঞ্জাম পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। তার সঙ্গে রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রাক। ফলে, রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়েছে।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১১
Share:

বিপদ: রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে লরি। নিজস্ব চিত্র

যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ হুগলি জেলার অহল্যাবাঈ রোড!

Advertisement

প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাণহানি হচ্ছে। তবু বেপরোয়া গতিতে ছুটছে যানবাহন। রাস্তার ধারে ইমারতি সরঞ্জাম পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। তার সঙ্গে রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রাক। ফলে, রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে জেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। জেলা পুলিশের কর্তারা অবশ্য অভিযোগ মানেননি।

চণ্ডীতলা থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৬ কিলোমিটার রাস্তাটি আগে ছিল পাঁচ মিটার চওড়া। ২০১৫ সাল থেকে রাজ্য সড়ক কর্তৃপক্ষ (স্টেট হাইওয়ে অথরিটি) রাস্তাটি সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। মাসখানেক আগে সেই কাজ শেষ হয়েছে। খরচ হয়েছে ১৭২ কোটি টাকা। সম্প্রসারণের ফলে রাস্তাটি ১০ মিটার চওড়া হয়েছে। এখন ডিভাইডার রং-সহ শেষ পর্বের কাজ চলছে।

Advertisement

চণ্ডীতলার বহু বাসিন্দা মনে করেন, রাস্তাটি সম্প্রাসারণ হওয়ার পর থেকেই দুর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। পুলিশের পরিসংখ্যানই বলছে, এ পর্যন্ত দু’মাসে ওই রাস্তায় দুর্ঘটনায় পাঁচ জন মারা গিয়েছেন। জখম হন সাত জন। এর মধ্যে দিন কয়েক আগে তারকেশ্বরের পিয়াসারায় মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মারা যান কলকাতা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর শঙ্কর প্রতিহার। একটি লরি তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে। জখম হন তাঁর স্ত্রী। গত সপ্তাহে আবার পিয়াসারারই ঘোষপুকুর এলাকার একটি বালি বোঝাই লরির ধাক্কায় মারা যান রূপম মণ্ডল নামে এক মোটরবাইক আরোহী। এমন উদাহরণ আরও রয়েছে।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ডানকুনি টোলপ্লাজায় অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই লরি-ট্রাকের উপরে নজরদারি বেড়েছে। ফলে, বহু লরি-ট্রাক জরিমানা এড়াতে প্রায়ই অহল্যাবাঈ রোড ব্যবহার করছে। দিনের যে কোনও সময় গেলেই দেখা যায়, রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী নিজেদের ইচ-বালি রাখার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ওই রাস্তাকেই। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ডরেল বসানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বহু যানচালকই তা মানেন না। কলাছড়া এলাকার এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘বেআইনি ভাবে ট্রাক দাঁড় করানো বা রাস্তার পাশে ইমারতি দ্রব্য ফেলা রুখতে পুলিশকে বারবার বলা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’’ আর এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘এ রাস্তায় পুলিশের টহলদারি খুব কম দেখা যায়।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘ওই রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে জন্য গার্ডরেল লাগানো হয়েছে। অবৈধ পার্কি রুখতে নজরদারি চলে।’’ তার পরেও দুর্ঘটনায় কেন লাগাম পরছে না, প্রশ্ন
তুলছেন স্থানীয়েরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement