দলের বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ মেনে ‘পিছু হটলেন’ তৃণমূল নেতৃত্ব।
হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কণিকা ঘোষকে সরিয়ে পঞ্চায়েতের কাজ দেখার ভার দেওয়া হল উপপ্রধান নির্মল দাসকে। বিভিন্ন সময় প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার-সহ নানা অভিযোগ এনে পঞ্চায়েত সদস্যদের বেশিরভাগ অনাস্থা এনেছিলেন। কার্যত তা মেনে নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব প্রধানের ডানা ছাঁটলেন বলে মনে করছেন দলের একাংশ।
সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন ১৪ জন তৃণমূল সদস্য। বিপক্ষ গোষ্ঠী দলে ভারী হওয়ায় প্রধানের পদ টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে কানাইপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। অনাস্থা আনায় জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত উপপ্রধান নির্মল দাস-সহ এক সদস্যকে শো’কজ করেন। শনিবার রাতে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা দুই সদস্যার বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগের তির ওঠে দলের ব্লক সভাপতি, প্রধান-শিবিরের বলে পরিচিত নিখিল চক্রবর্তী-সহ দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। পাল্টা তাদের বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে মাঠে নামে দলীয় নেতৃত্ব। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এলাকায় যান। সোমবার পুরমন্ত্রী ও জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম দলীয় সদস্যদের বৈঠকে ডাকেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্মলবাবুরা প্রধানের আচরণ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা জানান, সাধারণ মানুষের কাছে প্রধানের গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই তাঁরা প্রধানকে মেনে নেবেন না। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে প্রধানকে উপপ্রধানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
তপনবাবু বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েতের সমস্যা মিটে গিয়েছে। অনাস্থার ভোটাভুটি হবে না। দলের নির্দেশে প্রধান উপপ্রধানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। নতুন প্রধান না ঠিক করা পর্যন্ত নির্মলবাবুই কাজ চালাবেন।’’
কণিকাদেবীর বক্তব্য, ‘‘ক্ষমতা উপপ্রধানের হাতে তুলে দেওয়ার কথা দল বলেনি। বলেছে, উপপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে। আমি সেটাই করব। আমরা মিলেমিশে কাজ করব।’’