ডাকাতির জন্য জড়ো হওয়া ধৃত দুষ্কৃতীরা। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র (নীচে)। ছবি: তাপস ঘোষ
সোনা বন্ধকের বিনিময়ে ব্যান্ডেলের ঋণদানকারী একটি সংস্থার কার্যালয়ে ডাকাতির ছক পাকা হয়ে গিয়েছিল। তৈরি ছিল অস্ত্রশস্ত্র। তবে, পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় শেষরক্ষা হল না।
এক তরুণী-সহ ১০ দুষ্কৃতীর ওই চক্র ধরা পড়ে গেল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের জালে। কমিশনারেটের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। ধৃতদের মধ্যে সাত জন ভিন্ রাজ্যের। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, ধৃতদের থেকে নাইম এমএম, সেভেন এমএম পিস্তল এবং ওয়ান শটার রিভলভার মিলিয়ে সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে প্রচুর পরিমাণ গাঁজা ও তরল মাদক।
ধৃত তরুণীর নাম পরভিন বেগম ওরফে পাম্মি। সে হুগলি শিল্পাঞ্চলের কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিড্ডার সঙ্গিনী। হিড্ডা এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। পাম্মি জড়িত থাকায় তদন্তকারীদের ধারণা, এই চক্রের মাথায় হিড্ডার হাত থাকতে পারে। ধৃত সুরজ প্রসাদ, যুবরাজ ভগত, মনু কুমার, আমন সিংহ, ইজাজ খান এবং বিকাশ কুমার ওরফে ছোটু আদতে বিহারের বাসিন্দা। ব্রিজেশ যাদব নামে ধৃত আরও এক দুষ্কৃতীর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। তারা হুগলিতে থাকছিল। ডানকুনি, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, ব্যান্ডেল প্রভৃতি জায়গায় মাদকের কারবার করছিল। তারা অস্ত্র কিনছে বলে সম্প্রতি পুলিশ খবর পায়। এর পরেই কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা তাদের উপরে নজরদারি শুরু করেন।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতার আলিপুরের বাসিন্দা মহম্মদ নাসিম এবং ব্যান্ডেলের পূর্ব নলডাঙা বস্তির বাসিন্দা ঈশ্বর হরিজন নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পাম্মিকে ব্যান্ডেল থেকে ধরা হয় শুক্রবার। বাকিদের বৃহস্পতিবার। ধৃতদের শুক্রবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা ডাকাতির পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, পাম্মি গোটা বিষয়টিতে আগাগোড়া জড়িয়ে ছিল। ঈশ্বর পুলিশের কাছে দাবি করেছে, পাম্মির কথাতেই সে ওই কাজে সম্মত হয়। পুলিশের ধারণা, এর পরেই নাসিম-ঈশ্বর সুরজদের সঙ্গে মিলে যাবতীয় ছক কষে।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, হিড্ডার সঙ্গে ঈশ্বরের পরিচয় রয়েছে। জেলে সে হিড্ডার সঙ্গে দেখা করতে যায়। ভিন্ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের সঙ্গেও হিড্ডার যোগাযোগ রয়েছে। ছটপুজোর সময় ধৃতদের মধ্যে দু’জন ব্যান্ডেলে ঈশ্বরের বাড়িতে এসেছিল। কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, ধৃতদের মধ্যে একাধিক দুষ্কৃতীর নামে ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। হিড্ডার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।