প্রতীকী ছবি।
বাসে উঠে এক প্রৌঢ়কে চড় মারার অভিযোগ উঠল কর্তব্যরত দুই ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে, বালির মাইতিপাড়ার ঘটনা। তবে পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, যানজটের কারণে ওই ব্যক্তি বাসের জানলা দিয়ে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক কর্মীদের গালিগালাজ
করেন। যদিও রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষই কোথাও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।
এ দিন একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বাসে জানলার ধারে টুপি-মাফলার জড়ানো এক প্রৌঢ় বসে আছেন। বাসে উঠে তাঁর কলার ধরে এলোপাথাড়ি চড় মারছেন দুই পুলিশকর্মী। তাঁরা অভিযোগ করছেন, ভোর ৪টে থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁদের প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে। আর ওই প্রৌঢ় তাঁদের গালিগালাজ করছেন। যদিও পুলিশ যখন ওই প্রৌঢ়কে চড় মারছিল বলে অভিযোগ, সে সময়ে অন্য কোনও যাত্রীকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বাসে উঠে এমন ভাবে কি কাউকে মারতে পারে পুলিশ? প্রয়োজনে তো ওই প্রৌঢ়কে বাস থেকে নামিয়ে কথা বলা যেত।
পুলিশের একাংশ বলছে, ভোর থেকে যানজট সামলাতে গিয়ে ওই ট্র্যাফিক-কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা হয়। তাই অশ্লীল কথা শুনে তাঁরা ধৈর্য রাখতে পারেননি। আবার পুলিশেরই আর একটি অংশের প্রশ্ন, তাঁদেরও পরিবার রয়েছে। রাস্তায় ডিউটি করছেন বলে কি যে কেউ তাঁদের পরিবারকে নিয়ে অশ্লীল কথা বলতে পারেন?
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের ম্যারাথনের জন্য এ দিন ভোর থেকে দুই ও ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড়ে ‘নো এন্ট্রি’ ছিল। কিন্তু অভিযোগ, হুগলির দিক থেকে কিছু লরিচালক জোর করেই ‘নো এন্ট্রি’ দিয়ে ঢুকতে চাইছিলেন। তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধে দু’নম্বর জাতীয় সড়কে ডিউটিতে থাকা বালি মাইতিপাড়া সাব-ট্র্যাফিক গার্ডের দুই অফিসারের। রাস্তাতেই লরি রেখে দেওয়ায় পিছনে বাস ও অন্য গাড়ির যানজট হয়ে যায়। ৪০ নম্বর রুটের একটি বাসও যানজটে আটকে ছিল। লরি সরিয়ে গাড়ি ছাড়তেই বাসটি ওই পুলিশদের সামনে আসে। অভিযোগ, তখনই ওই প্রৌঢ় কেন যানজট হচ্ছে প্রশ্ন তুলে গালিগালাজ করেন। থুতুও ফেলেন। এর পরেই বাস দাঁড় করিয়ে তাতে ওঠেন দুই পুলিশকর্মী। কয়েক মিনিটের মধ্যে বাসটি অবশ্য গন্তব্যের দিকে রওনা দেয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে ৪০ নম্বর বাসমালিক সংগঠনের এক সদস্য কল্যাণকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘আমি যেটুকু শুনেছি, দীর্ঘ যানজটে যাত্রীরা বিরক্ত হচ্ছিলেন। এর মধ্যেই উল্টো দিক থেকে একটি ম্যাটাডর ঢুকে পড়ায় পুলিশকর্মীরা তার চালকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। কেন তাঁরা যানজট না ছেড়ে ম্যাটাডরের চালকের সঙ্গে বচসা করছেন, তা নিয়ে প্রতিবাদ করেন ওই যাত্রী। তাতেই পুলিশ মারধর করে বলে শুনেছি। তবে এটা একেবারেই ঠিক কাজ হয়নি।’’ স্থানীয় হোটেলের কর্মীরাও বলছেন, গালিগালাজ করায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা কয়েক বার ওই প্রৌঢ়কে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তিনি শোনেননি। এর পরেই পুলিশকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তবে ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি ঠিক কি হয়েছিল জানতে চাওয়া হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।’’