বিক্ষোভ: দুর্ঘটনার পর বাগনানে। নিজস্ব চিত্র
একের পর এক দুর্ঘটনা। বাগনানের মুরালিবাড়ের রেলওয়ে উড়ালপুল স্থালীয় লোকজনের ভাষায় কার্যত ‘বধ্যভূমি’। সেতুর উপরে ছাইবোঝাই ডাম্পার বা ইটবোঝাই বেপরোয়া ট্রাকের শিকার হচ্ছে অটোরিকশা, ট্রেকার এবং মোটরবাইক আরোহী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ইট বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় অটোর। অটোর চার মহিলা আরোহী গুরুতর জখম হন। রবিবার সকালে একটি যাত্রীবোঝাই ট্রেকারকে ধাক্কা মারে ছাইবোঝাই ট্যাঙ্কার। ট্রেকারের ১০ জন আরোহী আহত হন। একজনের অবস্থা গুরুতর। বেনাপুর-বাগনান রুটের ট্রেকারটি বেনাপুর যাচ্ছিল। উড়ালপুলে ওঠার মুখে উল্টোদিক থেকে প্রচণ্ড গতিতে আসা ছাই বোঝাই ট্যাঙ্কারটি তাকে ধাক্কা মারে। সকাল সাতটা নাগাদ ওই দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় বসিন্দারা সেতুর মুখে বাগনান-শ্যামপুর রোডে পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। তাঁদের অভিযোগ, সেতুতে বালি, ছাই এবং ইট বোঝাই ট্রাকের বেপরোয়া গতি রুখতে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না। সেই কারণেই রোজ দুর্ঘটনা ঘটছে। সেতুর মুখে যান নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ মোতায়েন করার দাবি জানান তাঁরা। পুলিশ তাঁদের দাবি মেনে নিলে অবরোধ ওঠে। এদিন থেকেই ওই জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে।
মুরালিবাড়ের উড়ালসেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে বছর দুয়েক আগে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, তারপর থেকে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। সেতুতে আপ-ডাউন লেনের কোনও ব্যবস্থা নেই। শ্যামপুরের ইটভাটাগুলিতে যাতায়াত করে হাজার হাজার ট্রাক। এ ছাড়াও আছে ছাই এবং বালির লরি। মূলত তাদের বেপরোয়া চলাচলের জেরেই দুর্ঘটনা ঘটছে। সেতুর উপরে তারা নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করে। আর তা করতে গিয়েই ছোট গাড়ি এবং মোটরবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটছে। বহু মোটরবাইক আরোহী এই সেতুতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাছেই মুম্বই রোডে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিপজ্জনক এই উড়াল সেতুতে নজরদারি নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। আর সেই সুযোগেই ট্রাকচালকেরা বেপরোয়া। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। রবিবারের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাই বোঝাই ট্রাকটি আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে চালক পলাতক।