বেহাল নলকূপ। —নিজস্ব িচত্র
নলকূপ রয়েছে খানকতক। অধিকাংশই অকেজো। যে-দু’তিনটি কেজো, তাতে জলের সঙ্গে ওঠে বালি। পুরসভার ট্যাপকলেও পর্যাপ্ত জল মেলে না। এই পরিস্থিতিতে জল-যন্ত্রণায় জেরবার বৈদ্যবাটী পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মাবতী কলোনির বাসিন্দারা। এ নিয়ে ক্ষোভ চরমে।
গত পুরভোটে বৈদ্যবাটী পুরসভার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। তবে, ওই ওয়ার্ডে জেতে ফরওয়ার্ড ব্লক। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই কারণে এই এলাকা বঞ্চনার শিকার। পুর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। পুরসভার জলকল বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিদায়ী পুর-পারিষদ তথা বর্তমান পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সুবীর ঘোষের দাবি, তিনি জানেনই না ওই এলাকার মানুষ জলকষ্টে ভুগছেন। যদিও, ভুক্তভোগীদের দাবি, বহু বার তাঁরা সমস্যার কথা পুরসভায় জানিয়েছেন।
এই ওয়ার্ডে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের বাস। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখানে গোটা দশেক নলকূপ রয়েছে। কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় তাতে কোনও কাজ হয় না। পুরসভার পাম্প থেকে ট্যাপকলের মাধ্যমে খুব কম সময় জল দেওয়া হয়। ফলে, চাহিদা মেটে না। শ্রাবন্তী মণ্ডল, অণিমা দাস, মায়া মণ্ডল, রিতা মণ্ডল, লক্ষ্মী চক্রবর্তীরা জানান, সারা দিনে ট্যাপকলে মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টা জল সরবরাহ করা হয়। লোডশেডিং হলে তাও মেলে না। অন্যান্য ওয়ার্ডে দিনে তিন বেলা সাড়ে ৭ ঘণ্টা করে জল দেওয়া হয় বলে তাঁদের দাবি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে রাস্তার ট্যাপকলে লাইন পড়ে। কে আগে জল নেবে, তা নিয়ে ঝগড়াঝাটি, হাতাহাতি লেগেই থাকে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে নলকূপগুলি সারানো হোক। ট্যাপকলে জল সরবরাহের সময়সীমা বাড়ানো হোক। শ্রাবন্তীর ক্ষোভ, ‘‘আমরা বঞ্চনার শিকার। মেপে মেপে জল ব্যবহার করতে হয়। বহু বার পুরসভার কর্তাদের বলেছি। লাভ হয়নি। নামেই আমরা পুরসভার বাসিন্দা। পরিষেবা গ্রামের থেকেও খারাপ।’’
ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন। পাশের ওয়ার্ডের বিদায়ী ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর মানোয়ার হোসেন এখানকারও কো-অর্ডিনেটর। তাঁর দাবি, জল সরবরাহের পাম্পটি বাম আমলে তৈরি। তখন থেকে একই নিয়মে সেটি থেকে জল সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু, বর্তমানে লোকসংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই বাড়ি বাড়ি সরবরাহের পরিমাণ কমেছে। তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দারা পর্যাপ্ত জল পাচ্ছেন না। সমস্যার কথা পুরসভায় অনেক বার জানানো হয়েছে। ফের বলব।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের এক
নেতার অভিযোগ, ‘‘বিরোধী দলের হাতে থাকা ওয়ার্ডে উপযুক্ত পরিষেবা সহজে মেলে না। সেই কারণেই ওই ওয়ার্ড বঞ্চিত।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে সুবীরবাবু বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে ট্যাপকলে জল সরবরাহের সময় বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নলকূপগুলির হাল খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’