চোলাই তৈরির উপকরণ নষ্ট করেছে পুলিশ। শনিবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা
নদিয়ার শান্তিপুরে বিষমদ কাণ্ডে মৃত্যুর পরই হাওড়া ও হুগলির গ্রামীণ পুলিশ শুরু করেছে জোরদার অভিযান। অভিযান চলছে চন্দননগর কমিশনারেট এলাকায়ও। কিন্তু হাওড়া-বর্ধমান মেন ও কর্ড শাখা বা হাওড়া-খ়ড়্গপুর শাখার বিভিন্ন স্টেশনের ধারে রমরমিয়ে চলছে চোলাইয়ের কারবার। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঠেক ভাঙার বিষয়ে তৎপরতা নেই রেল পুলিশের।
অভিযোগ, পূর্ব রেলের প্রতিটি স্টেশনের ধারেই সকাল থেকে ছেঁড়া চট টাঙিয়ে জ্যারিকেনে বা পাউচে বিক্রি হয় চোলাই। বালি, বেলুড়, উত্তরপাড়ার মতো শহরঘেঁষা স্টেশনও বাদ পড়ে না। শুধু স্টেশন চত্বরে রমরমা ব্যবসাই নয়, চোলাই পরিবহণের ক্ষেত্রে ট্রেনও বড় মাধ্যম। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, পাঁচ ও দশ লিটারের জ্যারিকেনে চোলাই ভর্তি করে অনেক সময়ই তুলে দেওয়া হয় ট্রেনের ভেন্ডার-কামরায়।
নির্দিষ্ট স্টেশনে বিনা বাধায় নামিয়ে নেওয়া হয় সে সব। অভিযোগ, রেল পুলিশের নজরদারি নেই।
যদিও রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘নদিয়া কাণ্ডের বহু আগে থেকেই রেল পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে বেআইনি
মদের বিরুদ্ধে।’’
জেলা পুলিশ অবশ্য অভিযান জোরদার করেছে গত কয়েক দিনে। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে পান্ডুয়ার খন্যান বাজার, সাতঘড়িয়া, পোটবা, বৈঁচির বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ লিটার চোলাই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে একজনকে। পুলিশ জানিয়েছে, পান্ডুয়া বাজার এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে সমীর দাস নামে আদিসপ্তগ্রামের এক বাসিন্দাকে। অভিযোগ, সমীর ওরফে মিঠুন দীর্ঘদিন ধরেই মোটরবাইকে চোলাই এনে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করত। শনিবারও চলেছে চোলাই অভিযান। পোলবা থানার সুদর্শন, বারোল, আকনা, পোলবা বাজারের বেশ কিছু জায়গা থেকে প্রায় ৩০০ লিটার, বলাগড় থানা এলাকা থেকে প্রায় ২০০ লিটার চোলাই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে চোলাই মদ, মদ তৈরির উপকরণ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বীরশিবপুর, ধূলাসিমলা, শাখাভাঙা, মদাই-সহ বিভিন্ন এলাকায় মদের ভাটি ও ঠেক ভেঙেছে পুলিশ। হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা জানান, প্রায় ৪০০ লিটার চোলাই, ৮০০ লিটার চোলাই তৈরির উপকরণ এবং ১০০০ লিটার গুড় আটক করা হয়েছে।