গঙ্গার চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই জেলার বাসিন্দাদের সংঘর্ষে নিখোঁজ আর একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হল।
একদিকে হুগলির বলাগড়, অন্যপারে নদিয়ার রানাঘাট। গঙ্গার এই অংশে দীর্ঘদিন ধরেই জেগে ওঠা চরে কে চাষ করবে তা নিয়ে দু জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষও বাধে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বলাগড় থেকে কিছু লোক গিয়ে চরের জমির ফসল কাটতে শুরু করে। সেই খবর পেয়ে নদিয়ার দিকের লোকজন সেখানে পৌঁছে তাদের বাধা দিলে দু’পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। হামলার সময় নৌকা করে পালাতে গিয়ে নদিয়ার সাহেবডাঙার বাসিন্দা ও প্রাক্তন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মী লক্ষ্মীনারায়ণ বিশ্বাস (৪৯) এবং হেমন্ত মণ্ডল (৫৫) নামে দু’জন নিখোঁজ হন। সেদিন সংঘর্যের জেরে দুই জেলার অন্তত ১৫ জন জখম হন।
দুই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। নদিয়ার বাসিন্দারা বলগাড় থানায় হামলার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বলাগড়ের ৬ জনকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি নিখোঁজ দুই ব্যক্তির পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই জেলার পুলিশ প্রশাসন গঙ্গাবক্ষে তল্লাশি শুরু করে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি নদিয়ার মুকুন্দপুর ঘাট থেকে লক্ষীনারায়ণবাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর এ দিন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ বলাগড়ের মিলনগড় ঘাট থেকে নিখোঁজ হেমন্ত মণ্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়। নদিয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বলাগড়ের সশস্ত্র হামলাকারীরা মারধর করে গঙ্গায় ফেলে দেওয়ায় দু’জনের মৃত্যু হয়।
হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘গঙ্গায় জেগে ওঠা চরগুলির কোনও সীমানা ঠিক করা নেই। ঠিক হয়েছে দুই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমানা নির্ধারণে যৌথ সমীক্ষা করে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা হবে।’’