প্রতীকী ছবি।
লঞ্চ তখন প্রায় মাঝগঙ্গায়। আচমকাই লঞ্চের একেবারে ধারে দাঁড়ানো এক প্রৌঢ়কে জলে ঝাঁপ দিতে দেখে চেঁচিয়ে ওঠেন যাত্রীরা। লঞ্চের কর্মীরা কোনও মতে তাঁকে জল থেকে তুলে আনলেও পরে তিনি মারা যান। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বালিতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়ের নাম শান্তিময় দত্ত (৫৪)। এ দিন বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ তিনি দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড়গামী লঞ্চে ওঠেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লঞ্চের রেলিংয়ের ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন শান্তিময়বাবু। হাতে ছিল ছোট একটা ব্যাগ। মাঝগঙ্গা পার করার সময়ে আচমকাই ওই প্রৌঢ় ব্যাগটি লঞ্চে ফেলে রেখে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লঞ্চের চালক আমিনুদ্দিন শেখ জানান, যাত্রীদের চিৎকারে তিনি কেবিন থেকে মুখ বাড়িয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন। কোনও মতে লঞ্চটি তাঁর পাশে নিয়ে যাওয়ার পরে কয়েক জন কর্মী জলে ঝাঁপ দিয়ে শান্তিময়বাবুকে তুলে আনেন।
আমিনুদ্দিন বলেন, ‘‘লঞ্চে এক চিকিৎসক ছিলেন। তিনি ওই প্রৌঢ়কে পরীক্ষা করে দেখেন, তখনও শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে। এ কথা জেনে বেলুড় জেটিতে খবর পাঠাই। তাড়াতাড়ি লঞ্চ নিয়ে সেখানে ফিরি।’’ জেটি থেকে খবর পেয়ে বেলুড় লঞ্চঘাটে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে হাজির হয়ে যায় বালি থানার পুলিশ। কিন্তু জেটিতে লঞ্চ আসার পরেই দেখা যায়, ওই প্রৌঢ় নিথর হয়ে গিয়েছেন। শ্বাসপ্রশ্বাসও চলছে না। তড়িঘড়ি পুলিশ তাঁকে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা শান্তিময়বাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, লঞ্চে ফেলে যাওয়া ব্যাগটির ভিতর থেকে একটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে একটি সুইসাইড নোট-ও। তাতে প্রৌঢ় লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করলেন, সে বিষয়ে বিশদে কিছু লেখা ছিল না। ওই সুইসাইড নোট থেকে বাড়ির ঠিকানা পেয়ে শান্তিময়বাবুর পরিজনদের খবর পাঠায় পুলিশ।