তাঁদের অপরাধ তাঁরা সিপিএমের সমর্থক। তাই তাঁদের ১০০ দিনের প্রকল্পের কোনও কাজই দেওয়া হচ্ছে বলে গোঘাট ২ ব্লকের বেঙ্গাই গ্রামের তিনটি তপসিলি পাড়ার প্রায় শ’দেড়েক শ্রমিক বিডিওর কাছে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযোগ পেয়ে বিডিও পঞ্চায়েতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তৃণমূল প্রধান সুস্মিতা মণ্ডল সহ অন্য সদস্যদের সতর্কও করেন। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতির কোন ও বদল হয়নি।
ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রকল্পের সুপারভাইজার তথা তৃণমূল কর্মী নির্মল সাঁতরা-সহ গ্রামের অমর রায়, মহাদেব রায়, চণ্ডীচরণ সাঁতরা প্রমুখ তৃণমূলের মাতব্বররা কাজে গেলেই গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। কাউকে আবার শর্ত দেওয়া হচ্ছে, কাজের শেষে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে মাস্টার রোলে সই করতে হবে।” বেঙ্গাই গ্রামের দক্ষিণ দুলে পাড়া, উত্তর দুলে পাড়া এবং পূর্ব দুলে পাড়ায় মাস খানেক ধরে এই অবস্থা চলছে। দিন কুড়ি আগে বিডিও ইশতিয়াক আহমেদ খানের কাছে অভিযোগ করা হলেও আজও তাঁদের কাজের ব্যবস্থা হয়নি বলে জানান ওই শ্রমিকেরা। যদিও বিডিও বলেন, ‘‘প্রধান-সহ সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শ্রমিকেরা নির্দিষ্ট আবেদন পত্রে কাজ চাইলে তাঁকে ১৫ দিনের কাজ দেওয়ার আইন রয়েছে। কাজ না দিতে পারলে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে প্রকল্পটির রূপায়ণকারী সংস্থা। এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতকেই সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।” তবে বিষয়টি ‘অন্যভাবে’ (রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বসে) মেটানোর চেষ্টাও হচ্ছে বলে বিডিও জানান।
পঞ্চায়েত প্রধান সুস্মিতা মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘সংশ্লিষ্ট পাড়া তিনটির রাজনৈতিক সমস্যার প্রভাব কাজের জায়গায় পড়েছে। বিষয়টা সুষ্ঠুভাবে মেটাতে পারিনি। তাই ওই শ্রমিকদের খবর পাঠানো হয়েছে যাতে তাঁরা পঞ্চায়েতে এসে বৈধভাবে ৪(ক)ফর্মে কাজের আবেদন করেন। আমরা কাজ দিতে না পারলে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকব।” বঞ্চিত শ্রমিকদের বক্তব্য, ‘‘এতদিন আবেদন না করেই কাজ পাওয়ার যে চল ছিল সেই সুযোগ থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। সব শ্রমিকের জন্য এক নিয়ম হবে না কেন? ৪(ক) ফর্মে কাজের জন্য আবেদন সবার জন্যই বাধ্যতামূলক করা হোক।”