হাত পাখাই সম্বল। বাউড়িয়া হাসপাতালে সুব্রত জানার তোলা ছবি।
কোথাও জেনারেটর নেই। কোথাও আবার থাকলেও চলে না। ফলে, এই প্রবল গরমে লোডশেডিং হলেই নাজেহাল হচ্ছেন হাওড়ার বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীরা।
বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল পাঁচলা গ্রামীণ হাসপাতাল--সব জায়গাতেই অবস্থা কম বেশি একই। লোডশেডিং হলে হাত-পাখাই সম্বল রোগীদের। দিনের বেলায় না হয় সূর্যের আলোয় কাজ চলে যায়। সন্ধ্যার জন্য মোমবাতি কিনে এনে রেখেছেন তাঁরা। সমস্যার কথা স্বীকার করে হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘সব হাসপাতালে জেনারেটরের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইনভার্টারের সাহায্যে কিছুটা হলেও অবস্থা ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয় লোডশেডিংয়ের সময়।’’
বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও জেনারেটর নেই। তিনটি ইনভার্টার থাকলেও তা যথাযথ নয় বলেই রোগীদের দাবি। দিন পনেরো ধরে ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে অভিষেক মণ্ডল ও বুবাই প্রামাণিক নামে দুই কিশোর। তাদের কথায়, ‘‘মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। সেই সময় পাখা চলে না। খুব কষ্ট হয়।’’ হাসপাতালেই ভর্তি বৃদ্ধ সরবার হোসেন বলেন, ‘‘বিদ্যুতের সমস্যা হয় বলে মোমবাতিও এনেছি।’’ হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, ‘‘জেনারেটরের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন জানানো হয়েছে।’’
আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নতুন জেনারেটর এলেও চালু হয়নি। ইনভার্টারও নেই। পুরনো একটি জেনারেটর থাকলেও তা দিয়ে ৮০ শয্যার হাসপাতালে পাখা চালানোর ব্যবস্থা করা যায় না। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবশঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘নতুন জেনারেটরটি চালুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ জেনারেটর নেই পাঁচলা গ্রামীণ হাসপাতালেও। ইনভার্টার থাকলেও পর্যাপ্ত নয়। উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালের জেনারেটর থাকলেও তা চালানো হয় না। ব্যবস্থা করা হয়েছে ইনভার্টারের। হাসপাতাল সুপার সুমন পালের যুক্তি, ‘‘তেলের সমস্যার কারণে জেনারেটর বন্ধ থাকে। লোডশেডিং হলে ইনভার্টার চলে।’’ এই হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন সুভাষ ধাড়া। তিনি বলেন, ‘‘যে ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছি সেখানে বিদ্যুৎ চলে গেলে কষ্টের শেষ নেই।’’ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা না থাকলেও এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পাখা নেই। হাসপাতাল সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘যেখানে পাখা নেই, সেখানে পাখা লাগানোর চেষ্টা করব।’’