ফাইল চিত্র।
সর্বশিক্ষা অভিযানে এতদিন অষ্টম শ্রেণির মধ্যে স্কুলছুটদের শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে কমর্সূচি চালানো হচ্ছিল। চলতি মাস থেকে পাল্টে গেল নিয়ম। এ বার ৬-১৮ বছর বয়সী অর্থাৎ, দ্বাদশ শ্রেণির মধ্যে স্কুলছুটদের ফেরানোর উদ্যোগও শুরু হল।
হাওড়ার স্কুলগুলির শিক্ষকদের নিয়ে কিছুদিন আগে এ বিষয়ে বৈঠক করেন সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের জেলা আধিকারিক বুলান ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘নিয়মমতো শিক্ষকদের হাতে সোমবার নতুন ‘চাইল্ড রেজিস্ট্রার’ তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ ওই দফতর জানিয়েছে, শিক্ষকেরা গ্রামে গ্রামে ওই রেজিস্ট্রার নিয়ে গিয়ে ৬-১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে স্কুলছুটদের নাম নথিভুক্ত করবেন। ওই ছাত্রছাত্রী যে শ্রেণি থেকে স্কুলছুট হয়েছে, সেই শ্রেণিতেই যাতে ভর্তি করানো যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য শিক্ষকদের নিয়ে কর্মশালাও করা হবে।
২০০৯ সালে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ আইন করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, সর্বশিক্ষা প্রকল্পের অধীনে নিরক্ষরতা দূর করতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক শিক্ষার অভিযান কার্যত শেষ হয়েছে। এর পরের পর্যায় হল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ। ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশন প্রকল্প। এই প্রকল্পে সরকারপুষ্ট স্কুলগুলিতে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পঠনপাঠনের মানের উন্নতির জন্য টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র। সেই কর্মসূচিরই অধীন হল নতুন এই ‘সমগ্র শিক্ষা পরিকল্পনা’।
অক্টোবর মাস থেকেই রাজ্য জুড়ে নতুন করে স্কুলছুটদের ফেরানোর পরিকল্পনা কার্যকর করতে নেমেছে রাজ্য সর্বশিক্ষা অভিযান সংক্রান্ত দফতর। ওই দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে সব জেলা প্রকল্প আধিকারিক এবং জেলাশাসকদের কাছে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই স্কুলছুটদের বাড়ির কাছাকাছি কোনও স্কুলে ভর্তি করাতে হবে।
সেই স্কুলে জায়গা না-থাকলে তাদের ভর্তি করাতে হবে মুক্ত বিদ্যালয়ে। খরচ দেবে কেন্দ্র। ওই সব ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পড়াশোনা করছে কিনা, সে বিষয়ে প্রতি পনেরো দিন অন্তর রিপোর্ট দিতে হবে।
রাজ্য সর্বশিক্ষা অভিযান দফতর সূত্রের খবর, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলছুটের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেকটাই।
অষ্টম শ্রেণির পর থেকেই ছাত্রেরা পড়া ছেড়ে দিয়ে কাজে চলে যায়। ছাত্রীদের কাজের সুযোগ কম থাকায় তাদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম। এর পিছনে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের কথাও বলছেন দফতরের কর্তারা।