আস্বাদ: পাতে পড়বে এই ফেলু মোদকের এই বেলদই। নিজস্ব চিত্র
গরমে আমবাঙালির পছন্দের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে দই। বৈশাখী সকালে অনেকের পছন্দ বেলপানা। এ বার বাঙালির পছন্দের এই দুই পদের মেলবন্ধনে বাজারেএল বেল-দই।
হঠাৎ বেল-দইয়ের ভাবনা কেন?
রিষড়ার ফেলু মোদক-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গরমে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু দিয়ে মিষ্টির নানা পদ তৈরি হয়েই থাকে। এ বার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন বেল। ফেলু মোদকের কর্ণধার বৈদ্যনাথ দে বলেন, ‘‘এ হল এমন এক মিষ্টি যাতে মিষ্টিমুখ করা হবে, আবার উপকারিতাও রয়েছে। গ্রীষ্মের দুপুরে এই দই খেয়ে যেমন প্রাণ জুড়োবে, তেমনি দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্য! জামাইষষ্ঠীতে এত দিন আম-দই হত। এ বার তার সঙ্গে বেলদই পড়বে জামাইয়ের পাতে।’’
কোন্নগরের এন ডি বোস লেনের বাসিন্দা কিশোর ওরফে বাবু ঘোষ বলেন, ‘‘বেল আর দইয়ের মিশ্রণ তো একটা আলাদা ব্যাপার। মিষ্টি দইয়ের চিরন্তন স্বাদ আর বেলের উপকারিতার যোগফল!’’ ইট-ব্যাবসায়ী কিশোরবাবু যোগ করেন, ‘‘বেলদইটা খেয়ে খেয়ে এত ভাল লেগেছে যে, বসিরহাটে এক ব্যবসায়ী বন্ধুকে পাঠিয়েছি। নতুন আইটেম বলে এতে চমকও আছে।’’
কী করে তৈরি হচ্ছে এই দই?
প্রথমে খোলা ছাড়িয়ে উষ্ণ গরম জলে দিয়ে বীজ বের করে মণ্ড আলাদা করে ফেলতে হবে। অন্য দিকে প্রায় ৮ ঘণ্টা দুধ ফুটিয়ে নেওয়া হয় চিনি মিশিয়ে। তার পরে বেলের মণ্ড অল্প দুধে মিশিয়ে সামান্য গরম করা হয়। এর পরে ফোটানো দুধের সঙ্গে বেলের মণ্ড মিশিয়ে দেওয়া হয়। ব্যস, বেলদই তৈরি। ঠাণ্ডা করে খেলেই হল। মাটির ভাড় বা হাড়ি, চিনামাটির পাত্র— সবেতেই জমানো যাবে এই বেলদই। বৈদ্যনাথবাবুর ছেলে অমিতাভর কথায়, মিক্সিতে বেল পেশাই করা সম্ভব নয়। মূলত পরিশ্রমের কারণেই সাধারণ মিষ্টি দইয়ের থেকে বেলদইয়ের দাম কিছুটা বেশি।
তাতে কী!
অমিতাভ বলছেন, সপ্তাহ দু’য়েক হল বেলদই বিক্রি করছেন তাঁরা। এখনই লোকজন এসে জিজ্ঞাসা করছেন, জামাইষষ্ঠীতে এই ‘আইটেম’ মিলবে কি না। জামাইয়ের পাতে চমক হিসেবে শাশুড়ি সাজিয়ে দিতে চাইছেন উপাদেয় এবং সুস্বাদু বেলদই।