মা আমার বিয়ে দিতে চাইছে, ক্লাসে জানাল ছাত্রী

স্কুলের মাঠে ক্লাস নিচ্ছেন থানার বড়বাবু। শ্রোতা ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা। স্কুলের রোজকার রুটিনের বাইরে সেই ক্লাস চলছে কখনও দেড় ঘণ্টা, কখনও দু’ঘণ্টা। ক্লাস শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানে উঠে আসছে নানা অজানা তথ্য।

Advertisement

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়়

ডোমজুড় শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০১:১৭
Share:

কর্মশালা: ডোমজুড়ের স্কুলে ছাত্রী ও অবিভাবকদের নিয়ে চলছে সচেতনার প্রচার। নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের মাঠে ক্লাস নিচ্ছেন থানার বড়বাবু। শ্রোতা ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা।

Advertisement

স্কুলের রোজকার রুটিনের বাইরে সেই ক্লাস চলছে কখনও দেড় ঘণ্টা, কখনও দু’ঘণ্টা। ক্লাস শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানে উঠে আসছে নানা অজানা তথ্য।

নাবালিকা বিয়ে, নারী পাচার বন্ধ করা, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার বন্ধ, শিশুশ্রম বন্ধ-সহ নানা বিষয় নিয়ে গালর্স এবং কো-এড স্কুলে কয়েক মাস ধরে এমন ক্লাস নিচ্ছে ডোমজুড় থানার আইসি সুবীর রায়ের নেতৃত্বে তৈরি বিশেষ দল। ক্লাসে ছাত্রী-অভাভাবকদের মহিলা পুলিশ অফিসারদের ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের উদ্যোগে এমন কর্মসূচিতে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে কয়েকটি নাবালিকা বিয়ে, কমেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব করে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা। কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাত্রীদের চিহ্নিত করে মনোবিদের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করেছে ডোমজুড় থানা। স্কুলে ক্লাস নেওয়া ছাড়াও বিলি করা হয়েছে লিফলেট, লাগানো হয়েছে পোস্টার।

ডোমজুড় থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ৬টি গালর্স এবং কো-এড স্কুলে তাঁদের ক্লাস হয়ে গিয়েছে। একটিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। সম্প্রতি বেগড়ি গালর্স স্কুলে প্রশ্নোত্তর পর্বে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, সে পড়তে চাইলেও মা তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। ডোমজুড় থানার একটি দল ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। বাতিল হয় বিয়ে। ডোমজুড় থানার তরফে ওই ছাত্রীটিকে পাঠ্যবই কিনে দেওয়া হয়েছে। পড়াশোনা চালাতে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

দিন কয়েক আগে মাকড়দহ গালর্স স্কুলে ক্লাসের পরে থানার এক মহিলা সাব ইন্সপেক্টরকে ফোন করে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, তার এক সহপাঠীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়েই নিবড়া এলাকায় ওই ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ এবং ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির কয়েক জন কর্তা। গ্রেফতার হয় পাত্র। শুধু নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা হয়, ওই ক্লাসগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়েও সচেতন করা হচ্ছে।

ডোমজুড় থানার এক কর্তা জানান, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আসছে। আমরা বলছি, অচেনা কারও বন্ধুত্বের প্রস্তাবে সাড়া না দিতে। এতে কাজও হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরক্ত করার বেশ কিছু অভিযোগ আসায় সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement