প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরল। কিন্তু বর্ষার মরসুমে মশার উপদ্রব থেকে এ বারও রেহাই পেলেন না আরামবাগের বাসিন্দারা।
গত বছর বর্ষার মরসুমে এ শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন অন্তত ১৫ জন। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাটা আরও বেশি। ঘর ঘরে জ্বর তো ছিলই। এ বার এখনও শহরে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের কথা জানা যায়নি ঠিকই। কিন্তু মশার উপদ্রব যে ভাবে দিন দিন বাড়ছে, তাতে প্রমাদ গুনছেন শহরবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার গাফিলতিতেই যত্রতত্র বৃষ্টির জল জমছে। নিকাশি নালাগুলি আবর্জনায় ভরছে। পুরো শহরটাই মশার আঁতুড়ঘর।
মশা নিয়ন্ত্রণে নিজের অসহায়তার কথা শুনিয়েছেন স্বয়ং আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামকেন্দ্রিক এই পুরসভায় মশার সঙ্গে সত্যিই পেরে ওঠা যাচ্ছে না। নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি সারা বছর ধরেই মশা মারার নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে। ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। নালায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু পরের দিনই আশপাশের গ্রামের মশার ঝাঁক ভিড় করছে।”
১৯টি ওয়ার্ড নিয়ে আরামবাগ পুর এলাকা। সারা বছরই এ শহরে মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হন বাসিন্দারা। কিন্তু বর্ষার মরসুমেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট ছাড় না-রেখেই অপরিকল্পিত নির্মাণে শহর ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে। বেআইনি ভরাটের জেরে নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। যে নিকাশি নালাগুলির অস্তিত্ব রয়েছে সেগুলি প্লাস্টিক ও পলিথিনে বুজে মশার উপদ্রব বাড়ছে। ঠিকমতো নালা পরিষ্কার করা হয় না। আধ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলে শহরের ১৩টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়। সেই জল বের হতে দু’পাঁচ দিন সময় লাগে।
পুরসভা অবশ্য দাবি করেছে, মশা তাড়াতে তারা চেষ্টার কসুর করছে না। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে প্রতি মাসের ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখ এবং ১৬ তারিখ থেকে ২০ তারিখ প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়ি গিয়ে দেখা হচ্ছে, জমা জল রয়েছে কিনা। সচেতনতা কর্মসূচিও জারি রাখা হয়েছে। প্রায়ই নিকাশি নালায় মশার লার্ভা মারার ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে।
তবু শহরবাসীর প্রশ্ন, মশা কমছে কই?