গাজন-সন্ন্যাসী: —নিজস্ব চিত্র।
শিব এখানে হটনগর। সেই হটনগরকে নিয়েই ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজন উৎসব পালন করে আসছেন আরামবাগের মইগ্রামের মানুষ। নীল ষষ্ঠীর রাতে শিবের বিয়ে হয়। তবে দুর্গার সঙ্গে নয়, একটা গামার গাছের সঙ্গে। তারপরেই শুরু হয় গাজন। এ বার শুক্রবার, গাজনের আটদিন আগে থেকে সন্ন্যাসী হয়েছেন ১২ জন। শুক্রবার গোড়া সন্ন্যাসী হন ১০০ জনের মতো। যাঁদের মধ্যে থাকেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বয়স্ক থেকে নবীন এমনকী শিশুও।
প্রথমে হয় বাণ ফোঁড়া। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা। জিভ থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অংশে লোহার রড ও তার দিয়ে ফোঁড়া হয় বাণ। ওই অবস্থায় বাজনার তালে নাচতে নাচতে গোটা গ্রাম পরিক্রমা করেন গাজন সন্ন্যাসীরা। তারপরে ৭ জন সন্ন্যাসীকে ত্রিশূল, কাটারি দিয়ে সাজানো পাটার উপর শোয়া অবস্থায় কাঁধে নিয়ে ঘোরানো হয় পুরো গ্রাম। উৎসবের সেরা আকর্ষণ থাকে ঝাঁপ। নামও নানারকম—বাবুই ঝাঁপ, দশলকি। গাজন সন্ন্যাসীরা একটি গরুর গাড়ি থেকে নীচে পেরেকের ওপর ঝাঁপ দেন। যার নাম বাবুই ঝাঁপ। দশলকি হল সন্ন্যাসীরা হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে মুখের সামনে আগুন জ্বালিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে বাণ ফোঁড়েন। যা দেখতে ভিড় করেন মানুষ। গাজন উপলক্ষে মন্দিরের পাশের মাঠে বসে মেলা। পুজো কমিটির সম্পাদক সুজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘গাজনের শেষে সন্ন্যাসীদের চিবোনোর জন্য দেওয়া হয় কালা পুষ্পের পাতা ও ডাঁটা। সাধারণের বিশ্বাস এতে বাণ ফোঁড়ার ব্যথার উপশম হয়। উৎসব উপলক্ষে আজ, শনিবার ও রবিবার বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।