ঘটনার পরে ভাঙা এটিএম। ছবি: তাপস ঘোষ
নিরাপত্তারক্ষীহীন এটিএম কেটে টাকা চুরি হয়ে গেল ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায়। এটিএমের তিনটি ‘ইন-বিল্ট ক্যামেরা’র সামনে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল কালো রং। দুষ্কৃতীদের যাতে শনাক্ত করা না যায়, সে জন্যই ওই কৌশল বলে পুলিশের ধারণা। শনিবার দুপুরে চুরির কথা জানাজানি হতেই ভিড় জমে এলাকায়। স্থানীয়দের ধারণা, শুক্রবার গভীর রাতে চুরি হয়। কারণ, শনিবার সকাল থেকে ওই কাউন্টারের শাটার নামানো ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। দুষ্কৃতীরা নিপুণ ভাবে ঠিক সেই জায়গাটি কেটেছে, যেখানে এটিএমের টাকা থাকে। তদন্তকারীদের ধারণা, এটিএম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কেউ এই ঘটনায় যুক্ত। তবে, ঠিক কত টাকা খোয়া গিয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এটিএম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা। ওই কাউন্টারে আলাদা কোনও সিসিক্যামেরা নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তেঁতুলতলায় জিটি রোড লাগোয়া জগদ্ধাত্রী মন্দিরের পাশেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই এটিএম যে বাড়িতে রয়েছে, তার মালিক মনোরঞ্জন দাস। তিনিই কাউন্টারটি পরিষ্কার করেন। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ সেই কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেন, কাউন্টারের শাটার নামানো। তিনি ভেবেছিলেন, এটিএমে টাকা ভরা হচ্ছে। পাশের চায়ের দোকানে তিনি গিয়ে সে কথা বলেন। দোকানি তাঁকে জানান, সকাল থেকেই তিনি ওই শাটার নামানো দেখছেন। টাকা তুলতে না-পেরে কয়েকজন গ্রাহক ফিরেও গিয়েছেন। এ কথা শুনে মনোরঞ্জনবাবুর সন্দেহ হয়। তিনি ফিরে এসে ওই কাউন্টারের শাটার তুলতেই চুরি টের পান।
খবর পেয়ে পুলিশ এবং এটিএম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থার লোকেরা আসেন। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘ভাড়া ছাড়াও কাউন্টারটি পরিষ্কার রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা আমাকে টাকা দেয়। সেই চুক্তিমতোই পরিষ্কার করতে গিয়ে চুরির বিষয়টি টের পাই। শুক্রবার রাতে এটিএমে টাকা ভরা হয়েছিল। মনে হয়, সে কথা দুষ্কৃতীরা জেনেই হানা দেয়।’’
ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভদ্রেশ্বরের বিঘাটিতে একটি সোনার দোকানের শাটার খুলে সোনা-রুপোর গয়না এবং নগদ টাকা হাতিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার কিনারা হয়নি। এ বার ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় এটিএম কেটে চুরির ঘটনায় পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, রাতে টহলদারি চলে।