সওয়ার: স্কুটার চালিয়ে ভদ্রেশ্বর থেকে বাঁশবেড়িয়া পর্যন্ত ‘প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন যাত্রা’ বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। ছবি: তাপস ঘোষ
না ছিল পুলিশের অনুমতি। না স্কুটার চালানোর অন্যতম শর্ত, মাথায় হেটমেট। বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে সোমবার পুলিশের সামনে দিয়েই নিজে স্কুটার চালিয়ে হুগলির ভদ্রেশ্বর থেকে বাঁশবেড়িয়া পর্যন্ত ‘প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন যাত্রা’ করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরীর বাড়ি যেতে এক দলীয় কর্মীর স্কুটারে সওয়ার হয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। তাঁদের হেলমেট ছিল না। এ জন্য ওই স্কুটার-মালিককে ৬১০০ টাকা জরিমানা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কিন্তু লকেটের বিরুদ্ধে এ দিন পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়ার রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
রাজ্য কংগ্রেসের প্রাক্তন সম্পাদক প্রীতম ঘোষ বলেন, ‘‘একই যাত্রায় পৃথক ফল মানেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে কেন্দ্রের আঁতাত রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে প্রিয়াঙ্কা গাঁধী বিনা হেলমেটে স্কুটার চড়ায় যদি জরিমানা দিতে হয়, তা হলে হুগলির সাংসদ পুলিশি ঘেরাটোপ টপকে কী করে পার পেয়ে গেলেন?’’ তৃণমূল আঁতাতের অভিযোগ মানেনি। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ওই বাইক র্যালির অনুমতি ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ লকেট অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এ দিনের যাত্রার পিছনে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ ছিল না। এটা মানুষের কল্যাণের জন্যই আয়োজন করা হয়েছিল। শাসকদলের মোটরবাইক র্যালির সময়ে কারও মাথায় হেলমেট থাকে না। পুলিশ তখন ছাড় দেয়।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে এ দিন ভদ্রেশ্বরের চণ্ডীতলা মাঠ থেকে কয়েকশো মোটরবাইক-স্কুটার নিয়ে র্যালি করেন লকেট। ছিল ট্যাবলোও। পিছনে এক সওয়ারিকে নিয়ে লকেট নিজেই স্কুটার চালান। চন্দননগরের তালডাঙা মোড় পর্যন্ত র্যালি অবাধেই আসে। এরপরে অনুমতি না-থাকার কারণ দেখিয়ে পুলিশ র্যালি আটকায়। অবশ্য লকেট এবং আরও কয়েকজন দলীয় কর্মী স্কুটার-মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে যান। পরে অন্য রাস্তা দিয়ে তালডাঙায় আটকে পড়া বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বাঁশবেড়িয়ায় পৌঁছন। র্যালি আটকানোর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিজেপি ভদ্রেশ্বরের গেটবাজারে অবরোধ করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের সরায় বলে অভিযোগ। কয়েকজনকে আটকও করা হয়। কলকাতায় ফেরার পথে লকেট তাঁদের ছাড়াতে ভদ্রেশ্বর থানায় যান।
লকেটের ক্ষোভ, ‘‘র্যালিকে ঘিরে আনমাদের কর্মীদের উপর পুলিশ তাণ্ডব চালাল। মহিলাদেরও মারধর করা হয়েছে। মনে হচ্ছিল পুলিশ প্রশাসনিক কাজ নয়, একটি দলের হয়ে কাজ করছে।’’ পুলিশ লাঠি চালানোর কথা মানেননি। কমিশনারেটের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘ওখানে লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুধু। কাউকে মারা হয়নি। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।’’