প্রতীকী ছবি।
জল নিকাশির ব্যবস্থা না-থাকায় বছরের পর বছর নষ্ট হচ্ছে আমতা-১ ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতের (রসপুর এবং বালিচক) অন্তত ১০ হাজার বিঘা আমন ধান। আনন্দবাজারে সম্প্রতি এ খবর প্রকাশিত হয়। তারপরেই সমস্যা সমাধানে মাঠে নামল আমতা-১ পঞ্চায়েতে সমিতি।
মঙ্গলবার সমিতির উদ্যোগে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা, সেচ দফতরের আমতা সাব-ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়াররা এবং ওই দুই পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান।
সমিতির সভাপতি ধনঞ্জয় বাকুলি জানান, ঠিক হয়েছে, আপাতত জমা জল বের করে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করা হবে। রসপুরের কুমারিয়া গ্রামের চারিদহ স্লুইস গেট দিয়ে জমা জল বের করে তা দামোদরে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে। কাজ তদারকের জন্য দু’টি পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে।
স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও ধনঞ্জয়বাবু জানান। তিনি বলেন, ‘‘সেচ দফতরকে বলা হয়েছে ডি-১ খালকে দামোদর এবং মান্দারিয়া খালের সঙ্গে কী ভাবে জোড়া যায় তার পরিকল্পনা করতে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ রসপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে বলেন, ‘‘নতুন খাল কাটা হলেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।’’
দামোদরের জলের চাপ কমাতে কাটা ‘ডি-১’ খালের কারণে প্রায় প্রতি বর্ষার মরসুমেই ভুগতে হয় ওই দুই পঞ্চায়েতের বহু চাষিকে। খালটি হুগলির দামোদর থেকে বেরিয়ে বালিচক পঞ্চায়েতের রামবল্লভপুরে এসে একটি মাঠে শেষ হয়ে গিয়েছে। চাষিদের অভিযোগ, মাঠে শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে এই খাল তাঁদের সর্বনাশের কারণ হয়েছে। তাঁরা জানান, বর্ষাকালে এই খালের জল এসে পড়ে রামবল্লভপুরের মাঠে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে ডুবিয়ে দেয় বালিচক এবং রসপুর পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি। এই জল মাঠ ও জমি উপছে দামোদরে পড়ার কথা। কোনও কোনও বছর দামোদর দিয়ে এই জল বেরিয়ে গেলেও বেশিরভাগ সময়ে বর্ষাকালে দামোদর ভরা থাকে। ফলে, জল নামে না। যেমনটি হয়েছে এ বছর।
বহু বছর আগে সেচ দফতর ওই খাল কেটেছিল। শুধু বর্ষাকালে বা ডিভিসি জল ছাড়লে দামোদরের বাড়তি চাপ কমানোই নয়, লক্ষ্য ছিল শুখা মরসুমে চাষিদের বোরো চাষের জন্য জলের জোগানও। কিন্তু খাল উপচে আসা জলে চাষিরা বিপন্ন হচ্ছেন।