এই ওভারব্রিজ ও মালগাড়ি নিয়ে সমস্যা। নিজস্ব চিত্র
প্ল্যাটফর্ম থেকে মালগাড়ি সরানোর দাবিতে রেল অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে নিত্যযাত্রী। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে খামারগাছি স্টেশনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার খামারগাছি স্টেশনের চতুর্থ প্ল্যাটফর্মে ১২ দিন ধরে একটি খালি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ফলে পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দারা বাজার হাট, স্কুল কলেজ, ডাকঘরে যাতায়াত করতে পারছেন না। টিকিট কাটতে গেলে স্টেশনের একপ্রান্তে অবস্থিত ফুট ওভারব্রিজ পেরিয়ে যেতে হয়।
বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ওই ওভারব্রিজের অবস্থাও বেহাল। ২০০-এর বেশি সিঁড়ি। উচ্চতাও বেশ ভালই। ফলে বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের পক্ষে যাতায়াতের সমস্যা হয়। সেখানে মালগাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, ওই লাইনের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করে না। ফলে ওই পথ দিয়ে সহজে ওপারে যাওয়া যেত। দীর্ঘ ১২ দিন ধরে তাও করা যাচ্ছে না। রেল থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কাছে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। সমাধান হচ্ছে না। তাই নিরুপায় হয়ে হামাগুড়ি দিয়ে মালগাড়ির তলা দিয়ে যাতায়াত করছেন গ্রামবাসী থেকে স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা। কারও কারও মাথা, হাতে পায়ে আঘাত লেগেছে।
স্টেশনের দুই প্রান্তে রয়েছে বগা, কামালপুর, সীজা নতুনবগা-সহ ১২টি গ্রাম। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা এ দিন সকাল ৭টা থেকে রেল অবরোধ করেন। এই অবরোধের ফলে ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাঁদের দাবি, মালগাড়িটি সরাতে তো হবেই। সেই সঙ্গে ফুট ওভারব্রিজ সংস্কার করতে হবে। অবস্থা বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থলে রেল পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও উপস্থিত হয়। পরে রেলের পদস্থ কর্তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে প্রায় ১ ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লেগে যায়।
খামারগাছির বাসিন্দা কিঙ্কর নন্দী বলেন, ‘‘প্ল্যাটফর্মের পাশে ১ বা ২ ঘণ্টা কিংবা একদিন মালগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে কোনও সমস্যা নয়। কিন্তু ১২দিন ধরে মালগাড়ি পড়ে থাকার ফলে ঝুঁকি নিয়ে গ্রামবাসীরা তার তলা দিয়ে যাতায়াত করছেন। সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও সমস্যা মেটেনি।’’ খামারগাছি যাত্রী সংগঠনের স্টেশন কমিটির সম্পাদক অশোক অধিকারী বলেন, ‘‘এই স্টেশনটি অবহেলিত। এখানকার যাত্রীরা সব রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। স্টেশন পারাপারের জন্য থাকা ওভারব্রিজের অবস্থাও খারাপ। বয়স্ক ও অসুস্থদের নিয়ে ২২৮টি সিঁড়ি ভেঙে যাতায়াত করা কষ্টকর। সেই যন্ত্রণা আরও বাড়িয়েছে মালগাড়িটি।’’
রেলের এক পদস্থ কর্তা জানান, আপাতত প্ল্যাটফর্মের শুরু ও শেষের দিকে মালগাড়ির দু’টি কামরাকে খুলে দেওয়া হবে। পরে ইঞ্জিনের মাধ্যমে মালগাড়িটি স্টেশন চত্বর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ফুট ওভারব্রিজ প্রসঙ্গে ওই কর্তা জানান, এই স্টেশনকে সাজিয়ে তোলার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মানুষ যাতে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে পারেন সেই চেষ্টা করা হবে।