ধৃত প্রতারক। ব্যান্ডেলে। নিজস্ব চিত্র
ঋণ দেওয়ার নামে বেশ কয়েক হাজার টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শেষে, প্রতারিতের পাতা ফাঁদেই ধরা পড়ল ওই ‘প্রতারক’। ঠাঁই হল শ্রীঘরে। শনিবার ব্যান্ডেলের লিচুবাগানের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত নিজেকে উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের বাসিন্দা অমিত রায় হিসাবে পরিচয় দিয়েছে। ওই পরিচয় সঠিক কিনা এবং এর আগে এই ধরনের কোনও ঘটনায় সে যুক্ত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওর সঙ্গে আরও কেউ রয়েছে কিনা, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি ফোনে ওই যুবকের সঙ্গে ব্যান্ডেলের লিচুবাগানের বাসিন্দা শুভসুন্দর রায়ের আলাপ হয়। যুবকটি জানায়, সে ঋণদানকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে দেবে। শুভ তার মাধ্যমে ঋণের আবেদনের কথা বলেন। গত ৯ অক্টোবর সে বাড়িতে এসে শুভর থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। সই করা একটি চেকও শুভ তাকে দেন। তাঁর সামনেই যুবকটি ওই চেকে ‘ক্যানসেলড’ লিখে দেয়। কিন্তু, সে চলে যাওয়ার ঘন্টাখানেক পরেই শুভর মোবাইলে বার্তা আসে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৫ হাজার টাকা তোলা হয়েছে।
শুভ বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে বুঝতে পারেন, ‘ভ্যানিশিং ইঙ্ক’ দিয়ে ‘ক্যানসেলড’ কথাটি লেখা হয়েছিল। ফলে, লেখাটি উবে যায়। তখন চেকে নির্দিষ্ট অঙ্ক লিখে সেই টাকা তুলে নেওয়া হয়। এক দিন পরে শুভ চুঁচুড়া থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। নিজেও বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে ওই যুবককে ধরতে ফাঁদ পাতেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, শুভর এক বন্ধু ফোন করে ওই যুবককে জানান, তিনিও ঋণ নিতে চান। তাঁর কথামতো শনিবার সকালে যুবকটি লিচুবাগানের নির্দিষ্ট জায়গায় আসেন। বেশ কিছুক্ষণ দু’জনের মধ্যে ঋণ সংক্রান্ত কথাবার্তা চলে। শুভ-সহ আরও কয়েক জন আশপাশেই ওৎ পেতে ছিলেন। সবাই মিলে ওই যুবককে ধরে ফেলেন। পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়।
শুভ বলেন, ‘‘ভ্যানিশিং কালি দিয়ে এমন কাণ্ড ঘটাবে, ভাবতেই পারিনি। তবে, স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় প্রতারককে ধরা গিয়েছে। এ বার গায়েব হওয়া টাকাটা পেলে বাঁচি।’’
পুলিশ মনে করছে, প্রতারণার কাজে যুবকটি পোক্ত নয়। কারণ, অন্যকে বোকা বানিয়ে টাকা হাতানোর পরেও সে মোবাইল ফোন চালু রেখে দিয়েছিল। যে এলাকা থেকে প্রতারণা করেছে, লোভে পড়ে সাতপাঁচ না ভেবে আবার সেখানে চলে এসেছে। পুলিশকে সে বলেছে, টাকার প্রয়োজন রয়েছে বলেই ওই কাজ করেছে।