ডানকুনির রামকৃষ্ণবাটিতে (ইনসেটে) জয়শ্রী অধিকারীর আত্মীয় ও পড়শিদের জটলা। ছবি: প্রকাশ পাল।
মিশুকে ব্যবহারের জন্য আত্মীয়-স্বজন থেকে পড়শি সকলের কাছেই অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন জয়শ্রী। দু’দিন আগেই বেড়াতে যাওয়ার ছবি আত্মীয়দের মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপ করে পাঠিয়েছেন। আর সেই ফোন মারফত তাঁরই মৃত্যু সংবাদ পেয়ে শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা পাড়া।
শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ সিকিমের নামচিতে পর্যটকদের একটি গাড়ি খাদে পড়ে যায়। তাতেই মৃত্যু হয় ওই দলের সদস্য জয়শ্রী অধিকারীর। বছর তেইশের ওই বধূর শ্বশুরবাড়ি হুগলির ডানকুনির রামকৃষ্ণবাটিতে। বাপেরবাড়ি হাওড়ার বাগনানের গোপালপুরে। বছর আড়াই আগে তাঁর সঙ্গে রামকৃষ্ণবাটির যুবক পিনাকী অধিকারীর বিয়ে হয়। আরপিএফ কর্মী পিনাকী শিলিগুড়িতে কর্মরত। গত ছ’-সাত মাস শিলিগুড়িতে স্বামীর সঙ্গেই থাকছিলেন জয়শ্রী। আত্মীয়েরা জানান, শিলিগুড়িতে থাকলেও ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন জয়শ্রী। গত ৩ ডিসেম্বর পিনাকীর আত্মীয় কোন্নগরের বাসিন্দা শবরী দে, তাঁর স্বামী মলয় দে ও ছেলে শুভ্রনীল এবং তাঁদের পরিচিত আরও একটি পরিবার শিলিগুড়িতে যান। সেখান থেকেই পিনাকী-জয়শ্রীর সঙ্গে তাঁরা বেড়াতে যান।
কিন্তু শুক্রবারের ঘটনা পিনাকীদের গোটা পাড়াকেই যেন স্তব্ধ করে দিয়েছে। শবরীর জ্যাঠতুতো ভাই দীপ্তনীল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই পিনাকীর ভাই পার্থ অধিকারী, শবরীর বাবা হরেন্দ্রনাথ মান্না-সহ অন্যরা সিকিম রওনা হন। পিনাকীর মা শুভ্রাদেবীকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত বৌমার মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। তাঁদের আত্মীয় সুতপা মান্না বলেন, ‘‘জয়শ্রী ভীষণ মিশুকে, হাসিখুশি ছিল। দু’দিন আগেই মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপে বেড়ানোর ছবি পাঠিয়েছিল। সেই মেয়েটারই যে এমন পরিণতি হবে, কে ভেবেছিল!’’ কোন্নগর দক্ষিণপাড়ায় মলয়বাবুদের পড়শিরাও উদ্বিগ্ন। মলয়বাবুর মাকেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত ঘটনার কথা জানানো হয়নি।