ভবনের শিলান্যাস। ছবি: তাপস ঘোষ।
শিলান্যাস হওয়ার পর বছর গড়াতে চলল। প্রথমে সিঙ্গুরের জমি বিলি নিয়ে প্রশাসনের ব্যস্ততা। তারপর নোট বাতিলের জেরে হুগলির চুঁচুড়ায় দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ কবে শুরু হবে, সেটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চুঁচুড়ার মিত্র বাগান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ একটি বাড়ির একাংশ ভাড়া নিয়ে চলছেa দমকল কেন্দ্রের দফতর। বাড়িটির একতলায় একটি ঘরে দমকলের অফিস। পাশের দু’টি ঘরে দমকল কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা। ভগ্নপ্রায় ঘরগুলির চারিদিকে গাছের শিকড় বেরিয়ে পড়েছে। তার ফলে বৃষ্টি এলেও দরজা-জানালা বন্ধ করা যায় না। শীতেও একই অবস্থা। প্রায়ই ছাদের চাঙড় খসে পড়ে। বর্ষায় বৃষ্টি জল যাতে ঘরে না পড়ে সে জন্য ছাদের উপরে প্লাস্টিকের চাদর দিয়ে ঢাকা। তার উপর চারপাশে আগাছা পরিষ্কার না করায় বিষধর সাপের উপদ্রবও আতঙ্কের কারণ কর্মীদের কাছে। নেই দমকলের গাড়ি রাখার কোনও গ্যারাজ বা শেড। গ্রীষ্ম,বর্ষা, শীত সব সময়েই খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকে দমকলের গাড়ি। যার ফলে মাঝেমধ্যেই বিগড়ে যায় গাড়ি।
স্থানীয় মানুষ থেকে দমকল কর্মী সকলেরই অভিযোগ, জেলা সদরে সমস্ত বড় বড় প্রশাসনিক ভবন রয়েছে। রয়েছে হাসপাতাল, একাধিক স্কুল-কলেজ। অথচ দমকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের এমন দুরবস্থা। প্রশাসন সূত্রে খবর, মাঝে দমকল কেন্দ্রটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা হয়েছিল। কিন্তু ওই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার মানুষ আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীকালে জেলাপ্রশাসন এবং স্থানীয় বিধায়কের উদ্যোগে চুঁচুড়ার পাঙ্কাটুলি এলাকায় জমি নিয়ে সেখানে নতুন দমকল কেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ওই জমিতে নতুন ভবন তৈরির জন্য শিলান্যাস হয়। কিন্তু তার পর কাজ শুরুর সময়েই সিঙ্গুরে চাষিদের জমি ফেরত দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে প্রশাসন। ফলে নির্মাণ কাজ আটকে যায়। সেই কাজ মিটতে না মিটতেই এ বার নোট বাতিলের চক্করে ফের কবে কাজ শুরু হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল জানান, ‘‘দমকলের নতুন ভবন তৈরির জন্য সমস্ত প্রস্তুতিই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সিঙ্গুরে জমি ফেরতের কাজে সরকারি আধিকারিকরা ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন নোট বাতিলের জেরে কাজ কবে শুরু হবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা হচ্ছে যতশীঘ্র সম্ভব কাজ শুরু করার।’’ চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘নভেম্বর মাসে দমকলকেন্দ্রের কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু নোট-কাণ্ডের ফলে তাতে বাধা পড়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক না হলে কাজে হাত দেওয়া যাবে না।’’