এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই মহিলার দেহ ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পণের দাবিতে মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে থানায় শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পিয়ালি চক্রবর্তী (৩১) নামে ওই গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ভদ্রেশ্বরের পূর্বাচল পল্লিতে। রবিবার ধৃতদের চন্দননগর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের দুজনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তরপাড়ার রাজকৃষ্ণ স্ট্রিটের বাসিন্দা পিয়ালিদেবীর সঙ্গে অমিত চক্রবর্তীর বিয়ে হয়। পিয়ালিদেবীর বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের সময় পাত্রপক্ষের দাবিমতো যৌতুক দেওয়া হলেও তাঁরা খুশি ছিলেন না। বিয়ের পর ব্যবসার কথা বলে পিয়ালিদেবীর মাধ্যমে আরও টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তাঁরা সেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের মেয়ের উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চলছে থাকে। এমনকী অমিত মদ্যপ অবস্থায় পিয়ালিদেবীকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিত বলেও বাপের বাড়ির তরফে অভিযোগ।
প্রথম প্রথম পিয়ালিদেবী বাপের বাড়িতে কিছু না জানালেও পরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ায় বাপের বাড়িতে সব জানান। এক সময় শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি উত্তরপাড়ায় এসে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু স্বামীর অনুরোধে গত শুক্রবার ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন। যদিও তারপরেও অত্যাচার থামেনি বলে বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ।
শ্বশুরবাড়ি সূত্রে খবর, শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে সকলেই শুয়ে পড়েছিল। রবিবার সকালে ঘরের পাখার সঙ্গে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পিয়ালিদেবীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তারপরেই তাঁর বাপের বাড়িতে মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
বধূর ভাই রূপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই দিদির উপর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার চালাচ্ছিল। সংসারে যাতে অশান্তি না হয় সে জন্য ও কিছু বলত না। এখন ওরা বলছে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমাদের ধারণা দিদিকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’