পক্ষে ভোট পড়েনি, মিলছে না কাজ

বিধানসভা নির্বাচনে পুরশুড়া কেন্দ্রে হেরেছেন সিপিএমের জোটপ্রার্থী। কিন্তু বুথভিত্তিক হিসাবে ওই কেন্দ্রের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের ভুঁয়েরা গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথে তৃণমূলের প্রার্থীর চেয়ে ১৫৪ ভোট বেশি পান জোটপ্রা‌র্থী।

Advertisement

পীষূষ নন্দী

পুরশুড়া শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৮:৩১
Share:

বিধানসভা নির্বাচনে পুরশুড়া কেন্দ্রে হেরেছেন সিপিএমের জোটপ্রার্থী। কিন্তু বুথভিত্তিক হিসাবে ওই কেন্দ্রের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের ভুঁয়েরা গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথে তৃণমূলের প্রার্থীর চেয়ে ১৫৪ ভোট বেশি পান জোটপ্রা‌র্থী। আর সেই ‘অপরাধে’ই সিপিএম সমর্থক চিহ্নিত করে তপসিলি অধ্যুষিত ওই বুথের অনন্ত ১৫০ জনকে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।

Advertisement

কাজ না পাওয়া শ্রমিকদের অভিযোগ, “ভোটের আগে শুরু বলেও ভোট এসে যাওয়ায় কাজ বন্ধ ছিল। গত শনিবার ফের একটি পুকুর ও খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়। সেখানে কাজে গেলে সুপারভাইজার তথা গ্রামের তৃণমূল কর্মী লক্ষণ পোড়েল জানিয়ে দেন সিপিএমের জোট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য দলের নেতারা তাঁদের কাজে নিতে নিষেধ করেছে।” বিষয়টি শ্রমিকরা মৌখিকভাবে পঞ্চায়েত আধিকারিকদের জানিয়েছেন। এতে কাজ না হলে তাঁরা বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে শ্রমিকেরা জানান। পুরশুড়ার বিডিও অনির্বাণ রায় বলেন, “কাজ বন্ধ করে দেওয়া কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর ধারে ভুঁয়েরা গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথে জবকার্ড হোল্ডার (১০০ দিন প্রকল্পের নথিভুক্ত শ্রমিক) আছেন অন্তত তিনশো জন। এলাকার নদীবাঁধ, খাল, এবং পুকুর সংস্কারের কাজে তাঁরা ১০০ দিন প্রকল্পে নিয়মিত কাজ পেয়ে আসছেন। বিধানসভা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট তফসিলি অধ্যুষিত বুথটিতে তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ নুরুজ্জামান ভোট পান ২৭৮টি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জোটপ্রার্থী কংগ্রেসের প্রতীম সিংহ রায়ের প্রাপ্ত ভোট ৪৩২টি। ভোটের এই ফল নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনাও আছে। কাজ থেকে বঞ্চিত শ্রমিকদের অভিযোগ, “শারীরিকভাবে শায়েস্তা করতে না পেরে আমাদের মতো গরিবদের পেটের ভাত মারছে তৃণমূল।”

Advertisement

পুরশুড়ার সিপিএম জোনাল নেত্রী অর্চনা মণ্ডল বলেন, “শাসক দলের এমন আচরণ নিয়ে সরকারের উপর মহলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।” অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পুরশুড়া পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রণজিৎ দলুই বলেন, “মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন ওই শ্রমিকেরা। আসলে ওই বুথ এলাকায় যত শ্রমিক আছেন, এই মূহূর্তে সেই অনুপাতে কাজ কম আছে। সেই কারণেই যাঁদের একেবারেই কম কাজ হয়েছে তাঁদের সুযোগ দিতেই কিছু শ্রমিককে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না।” যদিও ১০০ দিনের প্রকল্পে কোনও জবকার্ড হোল্ডার চাইলে তাঁকে কাজ দেওয়ার যে আইন রয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement