বাড়িতে ভূত আছে, সন্দেহে দম্পতিকে মারধর হরিপালে 

হরিপালের আদিবাসী অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামে ডাইন অপবাদে গ্রামছাড়া করা বা একঘরে করে রাখার অভিযোগ আগে উঠেছে। পুলিশকে হস্তক্ষেপও করতে হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৮
Share:

দম্পতির উপরে হামলা হল। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

বাড়িতে ভূত আছে, এই সন্দেহে এ বার হরিপালের এক দম্পতির উপরে হামলা হল। ভাঙচুরও চালানো হয় তাঁদের বাড়িতে। ফলে, ঘর ছাড়তে হয়েছে দম্পতিকে।

Advertisement

হরিপালের আদিবাসী অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামে ডাইন অপবাদে গ্রামছাড়া করা বা একঘরে করে রাখার অভিযোগ আগে উঠেছে। পুলিশকে হস্তক্ষেপও করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও গ্রামবাসীর একাংশের কুসংস্কারের জেরে হেনস্থা-নিগ্রহ যে বন্ধ হয়নি, আরও একবার সেই প্রমাণ মিলল ইলিপুর গ্রামের বাদল মালিক ও তাঁর স্ত্রী রিনার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায়। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্না অবশ্য গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার আক্রান্ত হন ইলিপুর গ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত আড্ডা এলাকার বাসিন্দা বাদল এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁদের অভিযোগ, মারধর করার পরে বাড়িও ভাঙচুর করে গ্রামবাসীদের একাংশ। রাতে ওঝা ডেকে এনে বাড়িতে গর্ত খুঁড়ে চলে ঝাড়ফুঁকও। মারের চোটে দম্পতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে দম্পতি বর্তমানে ঘর ছেড়ে ফিরে গিয়েছেন তারকেশ্বরের আস্তারা-দত্তপুর পঞ্চায়েতের একডালি গ্রামে। সেখানে বাদলের পৈতৃক বাড়ি।

Advertisement

কেন হামলা হল ওই দম্পতির উপরে? গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, কিছুদিন ধরে বাদল অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। তাই তাঁদের সন্দেহ হয়, ওই বাড়িতে ভূত আছে। রিনার মা সন্ধ্যা মালিক বলেন, ‘‘জামাইয়ের কোনও অস্বাভাবিক আচরণ দেখিনি। গ্রামবাসীরা অকারণে ওঁদের বদনাম করছে।’’ রিনা জানান, ভয়ে তাঁরা গ্রামে ফিরতে পারছেন না। আবার হামলা হতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে দু’পক্ষকে নিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করতে। বিধায়ক বলেন, ‘‘কুসংস্কার থেকেই ওইসব অপবাদ। আমি পঞ্চায়েতকে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করতে বলব।’’ ইলিপুর গ্রামটি শ্রীপতিপুর-ইলিপুর পঞ্চায়েতে। প্রধান সুকৃতি পাল পাত্রের দাবি, ‘‘ওই পরিবারটির জন্য কিছু করা হয়নি, এই অভিযোগ ঠিক নয়। দু’পক্ষকে ডাকা হয়েছিল। এক পক্ষ না-আসায় বৈঠক হয়নি। হামলার সময়ে আমিই পুলিশকে খবর দিই। বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement