অসচেতন: তারকেশ্বরের মন্দিরে পুজো দিতে ভিড় ভক্তদের। নেই মাস্ক বা স্যািনটাইজ়ারের ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র
তফাত একটাই।
নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ফ্লেক্স ঝুলেছে মঙ্গলবার। ব্যস্, এটুকুই। এ ছাড়া তারকেশ্বর মন্দিরের অবস্থা যথা পূর্বং!
মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় এখনও হুঁশ ফেরেনি মন্দির কর্তৃপক্ষের। মুখ্যমন্ত্রী-সহ সরকারি স্তরে যেখানে জমায়েত এড়াতে বারবার নিষেধ করা হচ্ছে, সেখানে সোমবারের পরে মঙ্গলবারেও দেখা গেল পুণ্যার্থীদের জন্য মন্দিরের দরজা অবারিত। এমনকি, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাটুকুও করা হয়নি। এ দিন অবশ্য সোমবারের চেয়ে ভিড় কিছুটা কম ছিল।
তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠ-সহ অনেক মন্দির বা উপাসনালয় বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা বিধিনিষেধ জারি করেছে। শপিং মল, সিনেমা হল, মেলা-খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু তারকেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ এখনও তেমন কিছু ভেবেই উঠতে পারেননি। কেন? মন্দির সূত্রের দাবি, মোহন্ত মহারাজ ঝাড়খণ্ডের কাঁকেতে রয়েছেন। করোনা নিয়ে বৈঠক করতে তিনি জরুরি ভিত্তিতে তারকেশ্বরে ফিরছেন। আজ, বুধবার তাঁর ফেরার কথা। তারপরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার এত উন্নতি সত্ত্বেও শুধুমাত্র মোহন্ত মহারাজ মন্দিরে না-থাকার জন্য জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না, এ কথায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। এমনকি, মন্দিরকে ঘিরে যাঁরা বছরভর ফুল-মালা, মিষ্টি, ধূপের ব্যবসা করেন, তাঁরাও মনে করছেন, জরুরি ভিত্তিতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাঁরাই বলছেন, আগে জীবন, পরে ব্যবসা। এক দোকানির কথায়, ‘‘মন্দির বন্ধ হলে বা লোকজন আসায় বিধিনিষেধ আরোপ হলে আমাদের ক্ষতি হবে ঠিকই। আমরা সেই ক্ষতি মেনে নিতে রাজি। কিন্তু জীবনই না থাকলে কী হবে?’’
আশার কথা একটাই। মন্দিরকে ঘিরে চৈত্রের গাজন-মেলা এ বার বন্ধ থাকছে। তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত এ দিন জানান, পুরসভার তরফে মোহন্ত মহারাজের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। তাঁর সম্মতিতেই গাজন মেলা বন্ধ রাখা হচ্ছে।