ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবারেও ঘরবন্দি রইল শেওড়াফুলির করোনা আক্রান্ত পরিবারের পাড়া। সেখানকার তিনটি মুদিখানার ঝাঁপ এ দিনও খোলেনি।
আক্রান্ত প্রৌঢ় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ছেলে এবং ভাইয়ের শরীরেও ওই ভাইরাস মিলেছে। বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল থেকে তাঁদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই দু’জনের পরিচর্যা করেছিলেন ওয়ালশের ছ’জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী। স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে ওই ছ’জনকে শ্রীরামপুরের মণিকমল হাসপাতালে সরকারি কোয়রান্টিন শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেই ওই ছয় কর্মী করোনা আক্রান্তদের পরিচর্যা করেছেন। ছ’জনের শরীরে কোনও জটিলতাও নেই। তবুও তাঁদের কোয়রান্টিনে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’’
এই সিদ্ধান্ত থেকেই পরিষ্কার, করোনা নিয়ে প্রশাসন কোনও ঝুঁকির রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না। এ দিনও ওয়ালশ হাসপাতালে জীবাণুনাশক ছড়ান দমকলকর্মীরা।
প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে আসা যে ১২ জন ওই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছিলেন, বুধবার রাতেই তাঁদের সিঙ্গুরের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে সরকারি কোয়রান্টিন শিবিরে পাঠানো হয়। তার আগে অবশ্য তাঁরা আইসোলেশন থেকে উধাও হয়ে যান। কেউ কেউ বাড়িতেও চলে যান। বেগতিক বুঝে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানান। সরকারি মহলে শোরগোল পড়ে। প্রাথমিক ভাবে আট জনকে হাসপাতালে ফেরানো সম্ভব হয়। পরে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বাকি চার জনকেও হাসপাতালে আনা হয়। নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, কোয়রান্টিন শিবিরে যেতে তাঁরা অরাজি ছিলেন। সেই কারণেই ঝগড়াঝাঁটি করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।
বৃহস্পতিবারেও শেওড়াফুলির করোনা আক্রান্ত পরিবারের পাড়া স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের আতঙ্ক কাটেনি। এক যুবক বলেন, ‘‘পাড়ায় একই পরিবারের তিন জন আক্রান্ত। ভয় থাকবে না! আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না। কয়েকটা দিন এই ভাবেই কাটুক।’’
পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এলাকাবাসীকে ভরসা জোগানোর চেষ্টা করছেন।