howrah

পদত্যাগ করব কেন, প্রশ্ন বহিষ্কৃত প্রধানের

শনিবার মনোজ বলেন, ‘‘আমি তো দলকে লিখিত ভাবে সব তথ্য জানিয়েছি। দল তো আমাকে লিখিত কিছুই দেয়নি। আমি পদত্যাগ করতে যাব কেন?’’

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দে

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০০:০১
Share:

প্রতীকী চিত্র

দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। আপাতত ‘নির্দল’ চণ্ডীতলার গরলগাছা পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংহ শনিবার বিকেল পর্যন্ত অবশ্য চেয়ার আঁকড়েই থেকে গেলেন। পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের একাংশ এখনও তাঁর পদত্যাগের দাবিতে অনড়। তবে, তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে মনোজ জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এ বার প্রশাসনিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে শাসকদল।

Advertisement

শনিবার মনোজ বলেন, ‘‘আমি তো দলকে লিখিত ভাবে সব তথ্য জানিয়েছি। দল তো আমাকে লিখিত কিছুই দেয়নি। আমি পদত্যাগ করতে যাব কেন?’’

মনোজ ইস্তফা না-দেওয়ায় শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গরলগাছা পঞ্চায়েতের প্রধান কিছু অনিয়ম করেছেন। মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অস্বচ্ছতা ছিল। যদি কোনও পদাধিকারী গরিব মানুষের টাকা মারার তাল করেন, তাঁকে শুধু দল থেকে বের করা নয়, জেলখানায় যাতে যান, তার ব্যবস্থা করা হবে।’’

Advertisement

বাড়ি অটুট থাকা সত্ত্বেও আমপানে রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ-প্রাপকদের তালিকায় মনোজের স্ত্রীর নাম ছিল। সেই তালিকা সামনে আসতে বিরোধীরা আন্দোলনে নামেন। প্রশাসন জানায়, মনোজ তাঁর স্ত্রীর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন। তবে, হইচই থামেনি। উল্টে মনোজের বিরুদ্ধে আরও কিছু অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
এই পরিস্থিতিতেই তৃণমূল নেতৃত্ব মনোজকে কিছুদিন আগে প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পদে বহাল থাকতে চেয়ে মনোজ অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি করেননি। কলকাতার দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ মনোজ দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করায় শুক্রবার কলকাতার তৃণমূল ভবন থেকে তাঁকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হয়।

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে শুক্রবার রাতেই দলীয় অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করেন মনোজ। সেই বৈঠকে উপস্থিত এক তৃণমূল নেতা জানান, সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখনই কৌশলগত কারণে প্রধান পদত্যাগের রাস্তায় হাঁটবেন না। দলের এক বিধায়ক প্রধানের সঙ্গে রয়েছেন। প্রধানের অনুগামীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। দল বহিষ্কার করলেও পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী প্রধান হিসেবে থাকার কিছুটা সময় তিনি পাবেন। পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা তাঁর পিছনে থাকলে আইন অনুযায়ী তিনি নির্দল হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতেই পারেন। তার আগে তাঁকে ব্লক প্রশাসনের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে।

মনোজের পিছনে ঠিক কতজন আছেন, শাসকদল এখন সেই হিসেব কষা শুরু করেছে। ১৩ আসনের পঞ্চায়েতটি বিরোধীশূন্য। এই অবস্থায় মনোজ ও তাঁর অনুগামী সদস্যদের ভাঙিয়ে বিজেপি বা সিপিএম কোনও ফায়দা তোলার চেষ্টা করে কিনা, সে প্রশ্নও শাসকদলকে ভাবাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বদলে যেতে পারে পঞ্চায়েতের সমীকরণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement