শুরু: দ্বারকেশ্বর নদের ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতি শুরু হয়েছে আরামবাগের জুবিলি পার্ক এলাকায়। বাকি বাঁধ কবে সারানো হবে তার প্রতীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
প্লাবনের জল নেমেছে। তবু দুশ্চিন্তা কাটছে না আরামবাগ মহকুমার দুর্গতদের। কারণ, তছনছ হয়ে যাওয়া নদীবাঁধ।
এখনও বর্ষার মরসুমের দু’মাস বাকি। তার মধ্যে যদি ফের অতিবৃষ্টি হয় বা ডিভিসি জল ছাড়ে, তা হলে কী হবে, এটাই দুশ্চিন্তা। দ্বিতীয় দফায় এমন পরিস্থিতি হওয়ার আগে সব বাঁধ মেরামত করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সেচ দফতরের কর্তারাও।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে গোটা মহকুমায় নদীবাঁধে তিনশোরও বেশি ভাঙনের জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫টি জায়গায় বড় ভাঙন (১০০-২৫০ মিটার) রয়েছে। ১৯৭৮ সালের বন্যার পর মহকুমায় বিধ্বস্ত বাঁধের এটাই রেকর্ড। সবচেয়ে বেশি বাঁধ ভেঙ্গেছে মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের অধীনে থাকা দামোদরের নদীবাঁধ এবং পুরশুড়ার মুণ্ডেশ্বরী নদীবাঁধ ও খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকায়। ধস এবং ঘোগ বাদে শুধু পুরশুড়া ব্লকেই দামোদরের নদীবাঁধ ভেঙেছে ৩৫টি জায়গায়। এ ছাড়া খানাকুল ২টি ব্লক এলাকায় এলাকায় ৪০টি জায়গায় বাঁধে ভাঙন রয়েছে।
মহকুমার মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকেশ্বর, দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী এবং রূপনারায়ণ নদী। সাম্প্রতিক প্লাবনে ওই সব নদীবাঁধের কিছু ভাঙন মেরামতের কাজ চললেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখনও এক ঝুড়ি মাটিও পড়েনি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ এবং সেচ দফতর নির্বিকার বলে অভিযোগ তুলেছেন প্লাবিত এলাকার মানুষ। দ্বারকেশ্বর নদীবাঁধ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীবাঁধের কিছু অংশের তত্ত্বাবধানে থাকা আরামবাগ মহকুমা সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার প্রিয়ম পাল বলেন, “আপাতত চারটি গুরুত্বপূর্ণ বড় ভাঙন-সহ মোট ২০টি জায়গায় মেরামতের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু করেছি আমরা। এ ছাড়াও অসংখ্য ঘোগ (বাঁধের গায়ে গর্ত) আছে। সেগুলি সামলানো গেলেও বেশ কিছু জায়গায় ৭০০ থেকে ৮০০ মিটার এলাকা জুড়ে যে সব ধস রয়েছে, সেগুলি এই মুহূর্তে মেরামত করা সম্ভব নয়। জল বইলেই ফের মাটি ধসে যাবে। সেগুলি শক্তপোক্ত করতে বর্ষার পরই কাজ শুরু করা হবে।
একই কথা বলেছেন দামোদর নদী এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাকি অংশের তত্ত্বাবধানে থাকা চাঁপাডাঙা মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের মহকুমা সহকারী বাস্তুকার সোমনাথ ঘোষও। তিনি জানান, পুরশুড়ায় দামোদরে মির্জাপুরের ভাঙা বাঁধ মেরামতের মালপত্র ফেলা হচ্ছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। বাকিগুলিতেও মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে। তবে, অধিকাংশ কাজ বর্ষার পর করা ছাড়া উপায় নেই।