দখল: আরামবাগ-চাঁপাডাঙা রাস্তার উপরে এ ভাবেই প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
রাস্তা আটকে মণ্ডপ তৈরির অভিযোগ উঠেছিল গত বছর। মুচলেকা দেওয়ায় একে বারে শেষ লগ্নে পুজো করার অনুমতি পায় আরামবাগের পুরপ্রশাসক তৃণমূল নেতা স্বপন নন্দীর পাড়ার পুজো কমিটি। ফের এ বছর রাজ্য সড়ক দখল করে পুজো মণ্ডপ তৈরির অভিযোগ উঠল ওই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে। পূর্ত দফতর এ বিষয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
আরামবাগ শহরের গৌরহাটি মোড় সংলগ্ন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ‘২-এর পল্লিকল্যাণ সমিতি’র পুজো মণ্ডপ নির্মাণ নিয়ে মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন মহকুমা পূর্ত দফতরের (নির্মাণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী আরামবাগ শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা দখল করে মণ্ডপ তৈরি করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
এ প্রসঙ্গে স্বপনবাবু বলেন, “সরাসরি পুজোর ব্যবস্থাপনায় এ বার আমি নেই। তবে পাড়ার পুজো মণ্ডপটি পিচ রাস্তা ছেড়েই করা হচ্ছে। যান চলাচলে অসুবিধা হবে না। প্রতি বছরের মতো এ বারও অনুমতি মিলবে বলে আশা করি।”পূর্ত দফতর অবশ্য জানিয়েছে, রাস্তা দখল করে মণ্ডপ বানালে পুজোর অনুমতি মিলবে না। ওই রাস্তার তদারকির দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের (নির্মাণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়ের অভিযোগ, “গতবার মুচলেকা দিয়েছিলেন ওঁরা। এ বারও একই ভাবে রাস্তা দখল করে মণ্ডপ করছেন ‘২-এর পল্লী’ পুজো কমিটি। রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি দখল করে পুজো করার অনুমতি আমরা দেব না। পরবর্তী সিদ্ধান্ত মহকুমা প্রশাসনের।”
মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘রাস্তা দখল করে কোনও মণ্ডপ তৈরি করা যাবে না। পূর্ত দফতরের থেকে ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে পুজো কমিটিকে। রাস্তা ছেড়ে রেখেই পুজো করবেন বলে ওঁরা জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না।” আরামবাগ ‘২ এর পল্লি কল্যাণ সমিতি’র পুজো এ বার ৪৩ তম বর্ষে পড়ছে। অতীতে তাদের মণ্ডপ হত স্থানীয় একটি পেট্রল পাম্প চত্বরে। কয়েক বছর পরে দমকলের তরফে আপত্তি ওঠায় রাস্তার উল্টোদিকে জীবনবিমা নিগম ভবনের সামনের জায়গায় এক বছর পুজো হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার থাকায় দমকল ফের আপত্তি তোলে। তারপর গত ১৯ বছর ধরে পূর্ত দফতরের ওই রাস্তার উপরেই মণ্ডপ করে পুজো করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে।
পুজো কমিটির সম্পাদক সুবীর দে বলেন, “পূর্ত দফতরের কাছে গত ৩ অক্টোবর অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। পূর্ত দফতর মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। গত বছর পিচ রাস্তার কিছুটা অংশ নিয়ে মণ্ডপ করা হয়েছিল। এ বার পিচের অংশ সম্পূর্ণ ছেড়ে রেখে মণ্ডপ করছি। দীর্ঘ দিন ধরে ওই জায়গাতেই পুজো হয়ে আসছে। আমাদের আশা, পূর্ত দফতরের অনুমতি পেতে কোনও অসুবিধা হবে না।” তাঁর দাবি, “কোনও বছরই পুজোর সময়ে যান চলাচলে কোনও অসুবিধা হতে দিই না। নিজেরাই যান নিয়ন্ত্রণ করি। সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশ সেই কাজে সহযোগিতা করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘শহরের বড় বাজেটের পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল আমাদের পুজো। একাধিক বার জেলা স্তরে সেরা পুজো, সেরা প্রতিমা, সেরা থিমের পুরস্কার পেয়েছি আমরা।’’ পঞ্চমীর দিন পুজোর সূচনা হয়। অন্য বছর পুজোর বাজেট হয় ৮ লক্ষ টাকার বেশি। এ বার তা কমে হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা।