সাফাই বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অভাব তো আছেই। তার উপরে গত আড়াই মাস ধরে সুপারের পদ শূন্য। এই পরিস্থিতির মধ্যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। সমস্যাটি আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের। এই সঙ্কটের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। তিনি জানান, আপাতত আর্থিক দিক সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আরামবাগ মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্তকে। প্রশাসনিক দায়ভার দেওয়া হয়েছে এই হাসপাতালেরই শিশু বিশেষজ্ঞ সুব্রত ঘোষকে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, রোগী ভর্তির পরিসংখ্যান অনুপাতে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম। চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালের পরেই এর স্থান। খাতায় কলমে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৩০০। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি হয় ৪২০-৪৫০ পর্যন্ত। আরামবাগ মহকুমা ছাড়াও সংলগ্ন বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়া থেকেও রোগী আসে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী আসেন গড়ে ৬০০। প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগীর রক্ত, মল, মূত্র-সহ নানা পরীক্ষানিরীক্ষা হয়। ভবনও ঝাঁ চকচকে। চিকিৎসক ঘাটতি নেই বললেই চলে।
পাঁচটি জেলার কেন্দ্রে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে গত ২৬ অগস্ট থেকে সর্বক্ষণের সুপার পদে কেউ নেই। মহকুমা হাসপাতাল সুপার শান্তনু নন্দী পড়াশোনার জন্য চলে যাওয়ায় অন্য চিকিৎসক ও নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে গা ছাড়া মনো দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘মহকুমা হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টাই কর্তব্যরত থাকতে হয় হাসপাতাল সুপারকে। তাৎক্ষণিক কিছু সিদ্ধান্তও নিতে হয়। রোগী দেখার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব সামাল দিতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। সমস্যার কথা জেলা ও রাজ্য স্তরে জানিয়েছি।’’
এই ডামাডোল পরিস্থিতিতে হাপাতালে গিয়ে দেখা গেল, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের আসা-যাওয়ার সময়ের ঠিক নেই। এলেও অনেককে নিজের কাজ ফেলে অন্য ঘরে গল্পে মজে থাকতে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন পেমেন্ট সংক্রান্ত ফাইল সুপারের সইয়ের অভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের টেবিলে ডাঁই হয়ে আছে। কেউ কেউ আবার হাসপাতালে কোনও রকম রোগী দেখে তাঁদের চেম্বারে চলে যাচ্ছেন। এমন ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ গোটা হাসপাতাল চত্বরে।
শুভ্রাংশুবাবু বলেন, ‘‘সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’