প্রতীকী চিত্র।
হাতে মাত্র তিন সপ্তাহ। দুর্গাপুজোয় এ বার জাঁকজমক যতটা, তার চেয়ে ঢের বেশি সতর্কতা। কারণ, এ বার উৎসবের দিনগুলিতেও করোনা পিছু ছাড়ছে না। তাই হুগলি শিল্পাঞ্চলে পুজো আয়োজনে জারি হল বেশ কিছু বিধিনিষেধ। কোভিড-পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে রাজ্য সরকার যে সব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা যাতে যথাযথ মেনে চলা হয়, সে জন্য মঙ্গলবার বৈঠক করা হল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে।
চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে ওই বৈঠকে পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর-সহ কমিশনারেটের অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, বিধায়ক অসিত মজুমদার, বিভিন্ন পুরসভার কর্তারা। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, সিইএসসি, দমকল, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। পুজো কমিটির পাশাপাশি বিভিন্ন শহরের কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির কর্মকর্তারাও হাজির ছিলেন।
পুলিশ আধিকারিকরা বারে বারেই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করেন। বলা হয়, মণ্ডপে কোনও অবস্থাতেই যেন ভিড় না হয়। দূরত্ববিধি যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সে জন্য যথাসম্ভব খোলা মণ্ডপ, ঢোকা-বেরনোর জন্য আলাদা এবং অপেক্ষাকৃত বড় গেট তৈরি করতে হবে। মণ্ডপে স্যানিটাইজ়েশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘অপেক্ষাকৃত বড় পুজো মণ্ডপগুলির আয়োজন পুলিশ সরেজমিনে দেখবে। অঞ্জলি দিতে হবে কয়েক খেপে। কোনও সাংস্কৃতিক বা বিচিত্রানুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না। ভিড় এড়াতে যা যা করার, সব করেই আচার এবং আনন্দ করতে হবে।’’
বিধি-নিষেধ
• যথাসম্ভব খোলা মণ্ডপ। ঢোকা-বেরনোর পৃথক এবং অপেক্ষাকৃত বড় গেট।
• মণ্ডপে ভিড় নয়। দূরত্ববিধি মানতে মণ্ডপের ভিতরে গোল দাগ কাটতে হবে।
• মাস্ক না-পরে মণ্ডপে
ঢোকা নিষেধ। প্রয়োজনে পুজো কমিটির তরফে মাস্ক দিতে হবে।
• মণ্ডপ স্যানিটাইজ করতে হবে।
• অঞ্জলি একাধিক বারে। নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে ফুল আনতে হবে। পুরোহিত মাইকে মন্ত্রোচ্চারণ
করবেন। যাতে দূরে দাঁড়িয়েও শোনা যায়।
• সাংস্কৃতিক বা বিচিত্রানুষ্ঠান করা যাবে না।
• বিচারকদের বড় দল নয়।
• বিসর্জনের শোভাযাত্রা নয়।
• নির্দিষ্ট সময়ে বিসর্জনের ঘাটে নিয়ে যেতে হবে প্রতিমা।
• পুজো কমিটির কেউ জলে নামতে পারবেন না। প্রতিমা ভাসান দেবেন পুরসভা-পঞ্চায়েতের লোক।
• বিসর্জন দেখতে ঘাটে জমায়েত নয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বার শোভাযাত্রা করা যাবে না। ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বিসর্জনের দিন ঠিক করা হয়েছে। এই চার দিনে পুজো কমিটিগুলিকে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট ঘাটে প্রতিমা নিয়ে যেতে হবে। তবে পুজো উদ্যোক্তারা জলে নামতে পারবেন না। পুরসভা বা পঞ্চায়েতের লোক বা কুলি ঘাটে থাকবেন। প্রতিমা তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। তাঁরাই প্রতিমা ভাসান দেবেন। বিসর্জন দেখতে ঘাটে জড়ো হওয়া চলবে না। পুজোর পুরস্কার দেওয়ার জন্য বিচারকরা বড় দল করে যেতে পারবেন না। সর্বাধিক দু’টি গাড়িতে তাঁরা যেতে পারবেন।
তাও সকাল থেকে দুপুরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে জন্য পুজোর দিনগুলিতে এবং বিসর্জনের সময় ঘাটে পর্যাপ্ত পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে বলে সিপি জানান।
একইসঙ্গে ডিজে ব্যবহার নিয়ে কড়া কথা শুনিয়েছেন কমিশনারেটের কর্তারা। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘ডিজে বাজানোয় আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কেউ ডিজে বাজালে বাজেয়াপ্ত করা হবে। ওই বক্স আর ফেরত দেওয়া হবে না।’’