বছর দুয়েক আগে ভোটে জিতে পুরবোর্ড গঠনের পর অসাধু প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। কিন্তু ক্ষমতার রঙ কিছুটা ফিকে হতেই রাশ আলগা হয়ে যায় পুর কর্তৃপক্ষের। ফের তলে তলে পুকুর বোজানো শুরু হয়ে গিয়েছে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে। কিছুদিন ধরে পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বি কে স্ট্রিটে একটি জমিতে একই সঙ্গে দুটি পুকুর বোজানোর কাজ চলছিল। মঙ্গলবার আনন্দবাজারে ওই খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। এ দিন সকালে পুরপ্রধান পুরসভার এক প্রতিনিধিদল নিয়ে গিয়ে নোটিস দিয়ে ওই পুকুর বোজানোর কাজ বন্ধ করে দেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, বি কে স্ট্রিটের ওই জমিটি সম্প্রতি এলাকার এক প্রভাবশালী প্রোমোটার কিনে নেন। তাঁর সঙ্গে ওই আবাসন প্রকল্পে আরও এক প্রোমোটার রয়েছেন। যে জমিতে আবাসন গড়ার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে তার পরিমাণ আড়াই বিঘা। জমিতে রয়েছে দুটি পুকুর এবং একটি কারখানার জমি। জমির মোট ১৯ জন শরিক। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে সম্প্রতি ওই দুই প্রোমোটার এবং শরিকদের তরফে জমিটি এক লপ্তে করার আবেদন করা হয়। কিন্তু এর মাঝেই ওই জমিতে থাকা পুকুর দু’টি বোজাতে শুরু করেন প্রোমোটারেরা। জমিতে যে কারখানা রয়েছে তার সুরকি এবং কারখানা ভাঙার ইট দিয়েই পুকুরের অনেকটা অংশ ইতিমধ্যেই বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। পুকুর বোজানোর বিরুদ্ধে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়।
এলাকার এক প্রবীণ বলেন, ‘‘এমনিতেই পুর এলাকায় বিভিন্ন পুকুর বুজিয়ে দেওয়ায় নিকালির হাল খারাপ। তার উপর এক সঙ্গে দু’টি পুকুর বোজানো হলে সামনের বর্ষায় এলাকার অবস্থা আরও খারাপ হবে। যাই হোক পুরপ্রধান নিজে এসে পুকুর বোজানোর কাজ বন্ধ করায় আমরা আশ্বস্ত।’’
এদিন সকালে পুরসভার পূর্ত বিভাগের দুই ইঞ্জিনিয়ার-সহ দশজনের এক প্রতিনিধি দল বিকে স্ট্রিটের ওই জমিতে যান। সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের পুকুর বোজাতে নিষেধ করেন। পুরসভার তরফে সেখানে ‘কাজ বন্ধের’ নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি উত্তরপাড়া থানা এবং মহকুমাশাসকের দফতরেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ওই জমিটি একত্রীকরণের যে আবেদন করা হয়েছিল তাতে পুরসভার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল পুকুর দুটি অক্ষত রাখতে হবে। একইভাবে কারখানার জমিতে আইন অনুয়ায়ী অন্য কোনও প্রকল্প করা যাবে না। কিন্তু সেই শর্ত মানা হয়নি। তাই আমরা ব্যবস্থা নিলাম।’’
তিনি জানান, ইতিমধ্যেই এক প্রোমোটারকে নোটিস দিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে। অন্যজনকেও ডেকে পাঠানো হচ্ছে।