আবর্জনা: জগদীশপুরে এমনই হাল নিকাশি নালার। ছবি: সুব্রত জানা
জনবসতির মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে নর্দমা। কত দিন যে সংস্কারের হয়নি, মনে করতে পারেন না স্থানীয়রা। সচেতনতাও প্রায় নেই বললেই চলে। প্রতিদিনের আবর্জনা জমতে জমতে উপচে পড়ে নালা। উলুবেড়িয়া পুরসভার জগদীশপুরের মাঝিপাড়া থেকে আবু কালামের বাড়ি পর্যন্ত এমনই ছবি। বাসিন্দাদের দাবি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই নর্দমা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। বর্ষা নামলেই নর্দমা উপচে নোংরা জল ছড়িয়ে পড়বে গোটা এলাকায়। বাড়বে মশার উপদ্রব।
তবে এই অবস্থা যে শুধু পুরসভার প্রান্তিক এলাকা জগদীশপুরের, তেমন নয়। গোটা শহরেই জমা জল আর আবর্জনায় অতিষ্ট বাসিন্দারা। ভয় মশা বাহিত রোগ হঠাৎ ছড়িয়ে প়়ড়ার।
মহকুমা প্রশাসকের অফিস থেকে গঙ্গারামপুর পর্যন্ত ওটি রোড-এর দু’পাশে ছিল নিকাশি নালা। সেগুলি ইতিমধ্যে বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে বসত বাড়ি, দোকানঘর। যে টুকু টিঁকে আছে, তা-ও ভরে উঠেছে ব্যবসায়ীদের ফেলা বর্জ্যে। অবাধে সে নালায় মিশছে নার্সিংহোমের বর্জ্যও।
এর ঠিক বিপরীত প্রান্তে বাউড়িয়া। শহরের জমা জল বের করে দেওয়ার জন্য ফোর্টগ্লস্টার থেকে একটি খাল রামেশ্বরনগর, রাধানগর, খাজুরি হয়ে শহর ছেড়ে উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের উপর দিয়ে গিয়ে মিশেছে কানা দামোদরে। এত দীর্ঘ খালটিও স্রোত হারিয়েছে সংস্কারের অভাবে। স্থানীয়রা বলছেন, বছর তিনেক আগে একবার এই খালটি সংস্কারের করতে নেমেছিল পুরসভার। কিন্তু জবরদখলকারীদের বাধায় তা সম্পূর্ণ করা যায়নি। যতটুকু সংস্কার করা হয়েছিল তাও এই তিন বছরে ফের বুজে গিয়েছে। এলাকার এটিই মূল নিকাশি। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নর্দমাগুলি এসে মিশেছে এই খালেই। সে সব নর্দমাও সংস্কার হয় না বলে বাসিন্দাদের দাবি।
ফোর্ট গ্লস্টারের বাসিন্দা তুষারকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘নর্দমা সাফ করা বা মশা মারার রাসায়নিক দেওয়ার বিষয়ে পুরসভা তেমন উদ্যোগী নয়। অথচ বর্ষা আসতে আর বেশি দেরিও নেই। মশার উপদ্রব তো বাড়বেই।’’ জানা গিয়েছে, ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের একমাস আগেই বলা হয়েছিল তাঁদের এলাকার নর্দমা এবং নিকাশি খালগুলি সংস্কারের জন্য পরিকল্পনা জমা দিতে। পুরসভা সূত্রের খবর, সে সব প্রস্তাব জমা পড়ে গিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তৃণমূল শাসিত পুরসভায় বিরোধী দলনেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে ১২টি নর্দমা এবং নিকাশি খাল সংস্কারের প্রস্তাব জমা দিয়েছি প্রায় এক মাস আগে। কবে যে কাজ শুরু হবে বুঝতেই পারছি না।’’ মশা মারার বিষয়ে কোনও উদ্যোগের কথাও তাঁদের জানানো হয়নি বলে সাবিরুদ্দিনের অভিযোগ।
তবে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ ঠেকাতে পরিকল্পনার অভাব নেই বলে দাবি করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্বাসউদ্দিন খান। তাঁর কথায়, ‘‘নর্দমা, নিকাশি খাল সাফ করতে প্রস্তাবগুলি ইঞ্জিনিয়ারেরা পরীক্ষা করে দেখছেন। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’ মশার উপদ্রব বন্ধ করার ব্যাপারে আব্বাসুদ্দিনের আশ্বাস, ‘‘মশা মারার কাজ করছে। বর্ষার আগে বিশেষ অভিযানও চালানো হবে।’’