ছবিটা পুরো পাল্টে গেল পাঁচ বছরে!
আগের পঞ্চায়েত ভোটে হাওড়ার শ্যামপুর-১ ব্লকে ভাল ফল করেছিল বামফ্রন্ট। এ বার তারা প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না! এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে অর্ধেকেরও বেশি আসনে তারা মনোনয়নই জমা দিতে পারেনি।
এই ব্লকে মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১০। মোট আসন ১৫৬টি। ২০১৩ সালের ভোটে বাণেশ্বরপুর-১ ও ২ এবং কমলপুর— এই তিনটি পঞ্চায়েতে জিতে বোর্ড গঠন করেছিল বামফ্রন্ট। বাকি সাতটি পঞ্চায়েতে তৃণমূল বোর্ড গঠন করলেও অনেকগুলি করে আসন পেয়েছিল বামেরা। পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। বামফ্রন্ট পেয়েছিল ১৩টি। তৃণমূল ১৭টি। জেলা পরিষদে তিনটি আসনের মধ্যেও একটি পায় বামফ্রন্ট।
কিন্তু এ বার এখনও পর্যন্ত প্রার্থীই ঠিক করতে পারেনি বামেরা। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা সংরক্ষিত আসনগুলিতে। সিপিএমের এক স্থানীয় নেতার অভিযোগ, সংরক্ষিত আসনের কোনও প্রার্থী যদিও বা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, তাঁকে পরের দিনই টোপ দিয়ে ভাঙিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল। যদিও এ কথা মানতে রাজি হননি তৃণমূল নেতারা।
সিপিএমের শ্যামপুর-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুরথ মাইতি প্রার্থী না-পাওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আসলে উলুবেড়িয়া লোকসভার উপ-নির্বাচনেই আমাদের বেশ ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। বহু বুথে আমরা এত কম ভোট পেয়েছি যে কর্মীরা হতাশ। তবে মনোয়য়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ এখনও দেরি আছে। আশা করি সব আসনে প্রার্থী দিতে পারব।’’ একই বক্তব্য ফরওয়ার্ড ব্লকের শ্যামপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক অসিত সাউয়েরও। উলুবেড়িয়া লোকসভার উপ-নির্বাচনে শ্যামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বামেরা তৃতীয় স্থানে চলে আসে।
রাজ্যের শাসকদল অবশ্য চাইছে পঞ্চায়েত ভোটে বামফ্রন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। কারণ ‘বিজেপি জুজু’। তৃণমূল পরিচালিত শ্যামপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জিত বেরা বলেন, ‘‘আমরা সিপিএম নেতাদের বলছি, মাঠে নামুন। না হলে তো বিজেপি আপনাদের জায়গা দখল করে নেবে।’’ সুরথবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘বিজেপিও খুব ভাল অবস্থায় নেই। তাদের পক্ষ থেকেই বরং জোট বেঁধে লড়াই করার জন্য আমাদের কাছে প্রস্তাব আসছে। আমরা বিজেপির সঙ্গে কোনও মতেই জোট করব না।’’ বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিকের দাবি, ‘‘শ্যামপুরে আমাদের অবস্থা খুব ভাল। কারও সঙ্গে জোট করতে হবে না।’’