ফাইল ছবি
শহরের বহু প্রাচীন যৌনপল্লি ‘বেলতলা’র বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়েছিল ২০০৮ সালে। কিন্তু পেশা ছেড়ে নতুন ঠিকানায় গিয়েও যৌনকর্মী এবং তাঁদের পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ। ওই মহিলাদের ক্ষোভ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করাই দায়। পুর-পরিষেবা নিয়ে বঞ্চনারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
মহকুমাশাসকের অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বেলতলার ওই বাসিন্দাদের নতুন ঠিকানা ওই ওয়ার্ডেরই ৬ নম্বরের বিদ্যাসাগর কলোনি। ২০০৮ সালে বাম পুরবোর্ড সেখানে ৩০টি পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। পুনর্বাসন বলতে পরিবার পিছু অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া ৬ ফুট বাই ১০ ফুটের একটি ঘর এবং ৩ ফুট বাই ১০ ফুটের একটি বারান্দা। সেই বারান্দায় রান্না, পরিবারের অতিরিক্ত সদস্যদের রাতে থাকতে হয়। গায়ে গায়ে দু’টি পৃথক কলোনির জন্য শৌচাগার আছে তিনটি করে। আর আছে মোট তিনটি টিউবওয়েল এবং তিনটি কল। ঘরের দেওয়াল ও অ্যাসবেসটসের ছাউনির মাঝে অনেকটা ফাঁক। কেউ কেউ নিজের খরচে সেগুলি ভরাট করে নিলেও অধিকাংশই ফাঁকা। অধিকাংশ বাড়ির দরজা ও মেঝেও ফেটে চৌচির।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, আগের ৩০টি পরিবার এখন বেড়ে হয়েছে ৩৮টি। সদস্যসংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০০ জন। স্থানীয় মহিলাদের অধিকাংশ ভিক্ষা করে দিন গুজরান করেন। কেউ বা হোটেলে থালা ধোওয়ার কাজ করেন। পুরুষদের অধিকাংশই রিকশা চালান। কেউ রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে, কেউ ফল বিক্রি করেন। দৈনিক উপার্জন গড়ে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘‘আমাদের দাবি ছিল আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পুনর্বাসনের। ঘর আর শৌচাগারের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু না হয় আবর্জনা সাফাই, না হয় উন্নয়ন। পুরসভা এখানে কোনও কাজ করে না।’’
স্থানীয় রাজু মাজি, রুস্তম আলি খানের কথায়, ‘‘ঋণের ব্যবস্থা, গৃহ সংস্কার, অতিরিক্ত গৃহ-সহ নানা পরিষেবা চেয়ে পুরসভায় অনেক আবেদন করেছি। কোনও লাভ হয়নি প্রয়োজনে আমরা আন্দোলন করব।”
আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর কলোনির প্রত্যেক পরিবারের মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আওতায় এবং ‘স্বাস্থ্য সাথী’ প্রকল্পে আনা হবে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির সমস্যাও মেটানো হবে।’’