ছবি: শাটারস্টক।
কর্মী সঙ্কট কাটেনি। ফলে, প্রতিশ্রুতির দু’মাস পরেও চন্দননগরের রূপলাল নন্দী ক্যানসার হাসপাতাল চালু হল না। রোগীরা তো হতাশ হলেনই, হাসপাতালটি চালু করতে যাঁরা উদ্যোগী হয়েছিলেন, তাঁরাও ক্ষুব্ধ।
ওই হাসপাতালে কর্মী ও চিকিৎসকদের আসার কথা কলকাতার চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতাল থেকে। কিন্তু সেখান থেকে কেউ আসেননি। কলকাতার ওই হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, কর্মী-চিকিৎসকদের অভাবেই চন্দননগরের হাসপাতালটির কাজ পুরোমাত্রায় শুরু করা যাচ্ছে না।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে গত সেপ্টেম্বরে চন্দননগরের হাসপাতালটি চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন একদিন ক্যানসার নির্ণয়ের জন্য ক্যাম্প হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, ১৫ নভেম্বর থেকে হাসপাতালটি চালু হবে। প্রতি মাসের দ্বিতীয় সোমবার ওই হাসপাতালে মহিলাদের ক্যানসার নির্ণয়ের ক্যাম্প হবে। চলবে সচেতনতা শিবির। সেই শিবিরের জন্য চন্দননগর পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য নেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে প্রচারও শুরু হয়। কিন্তু ক্যাম্প বা শিবির তো হয়ইনি, ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসাও শুরু হয়নি।
হাসপাতালটি চালু করতে যাঁরা উদ্যোগী হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ‘অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’র কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। সব রকম চেষ্টার পরেও তিনি ক্ষুব্ধ। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘রূপলাল নন্দী হাসপাতাল চালু হয়েও কেন পুরোমাত্রায় কাজ শুরু হচ্ছে না, সেই ব্যাপারে কোনও উত্তর পাচ্ছি না। এই অঞ্চলে প্রচুর ক্যানসার রোগী রয়েছেন। বন্ধ জুটমিলের শ্রমিকেরা ক্যানসারে মারা যাচ্ছেন। প্রয়োজনে শুধু চন্দননগর নয়, হুগলি-চুঁচুড়া ও ভদ্রেশ্বর পুরসভাকেও এই কাজে যুক্ত করা যেতে পারে।’’ চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘ওই হাসপাতাল চালু হলে পুরসভার তরফে সব রকম সাহায্যের জন্য আমরা প্রস্তুত। হাসপাতালটি চালুর ক্ষেত্রে কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা ফের কথা বলব।’’
চন্দননগরে দান করা সম্পত্তিতে ২০ শয্যার ক্যানসার হাসপাতালটি চলত। কলকাতার বাইরে জেলায় পুরোদস্তুর ক্যানসার হাসপাতাল বলতে রাজ্যে এই একটিই রয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর আগে কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্যে চলা ওই হাসপাতাল থেকে সব চিকিৎসক এবং কর্মীকে তুলে নেওয়া হয় কলকাতার চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে। পরিষেবায় সঙ্কট দেখা দেয় চন্দননগরের হাসপাতালটিতে। অন্তত ২০ বছর আগে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালের অধিকর্তা জয়ন্ত চক্রবর্তীর সঙ্গে চন্দননগরের কয়েকটি সংস্থার বৈঠক হয়।
সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় চন্দননগরের হাসপাতালটি খুলবে। তারপরেও লাভ হল না।