এমনই অবস্থা শিবপুর ঘাটের। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
কলকাতা পারলেও হাওড়া পারল না!
গঙ্গার ঘাট পরিষ্কারের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজোয় যে উদ্যোগ দেখিয়েছিল হাওড়া পুরসভা, কালীপুজোয় কিন্তু তার অনেকটা অভাব দেখা গেল। বিসর্জনের ২৪ ঘণ্টা পরেও অপরিচ্ছন্ন রয়ে গেল হাওড়ার দিকের গঙ্গার ঘাটগুলি। অন্য দিকে, প্রতিমার কাঠামো, খড়, শুকনো ফুলমালা দ্রুত সরিয়ে ফেলে কলকাতার ঘাটগুলিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হল রাতারাতি।
গঙ্গাদূষণ রুখতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল বিসর্জনের পরে গঙ্গার ঘাট পরিষ্কার রাখতে। দুর্গাপুজোর পরে সেই কাজ সুষ্ঠ ভাবে হলেও কালীপুজোর বিসর্জনের পরে দেখা গেল উল্টো চিত্র। হাওড়ার অন্যতম বড় ঘাটগুলির মধ্যে রয়েছে রামকৃষ্ণপুর ঘাট ও শিবপুর ঘাট। বুধবার বিকেলে রামকৃষ্ণপুর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল সেখানে কিছু না থাকলেও গঙ্গা থেকে আবর্জনা তুলে রাখা হয়েছে পাড় সংলগ্ন গ্র্যান্ড ফোরশোর রোডের উপরে। রাস্তার উপরে স্তূপাকৃতি হয়ে পড়ে রয়েছে নানা ধরনের প্লাস্টিক, খড়ের আঁটি, ছেঁড়া বস্তা আর পুজোর সামগ্রী।
সবচেয়ে খারাপ চিত্র শিবপুর ঘাটে। এ দিন বিকেলেও দেখা গিয়েছে গোটা ঘাট জুড়ে পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামোর অংশ, খড়-সহ অন্য আবর্জনা। জলে ভাসছে কাঠামোর ভাঙা অংশ, প্লাস্টিক, পুজোর শুকনো ফুলমালা।
অথচ হাওড়া পুরসভার দাবি, এ বার কালীপুজোর ভাসানের জন্য বালি থেকে হাওড়া পর্যন্ত গঙ্গার ১৩টি ছোট-বড় ঘাটে প্রায় ৭৫০ কর্মী কাজ করেছেন। প্রতিটি ঘাটে পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী ছাড়াও ছিল সিসি ক্যামেরার নজরদারি। গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ঘাটে ঘুরে বিসর্জন ও ঘাট পরিষ্কারের তদারকি করেন পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী-সহ দফতরের পদস্থ কর্তারা।
কিন্তু প্রশ্ন হল এর পরেও কেন ঠিক মতো পরিষ্কার হল না গঙ্গার ঘাট? হাওড়া পুরসভার যুক্তি, এ বার মঙ্গলবার পর্যন্ত কমবেশি সাড়ে ৩ হাজার প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে গঙ্গায়। এমনকী বুধবারও কিছু প্রতিমা বিসর্জন হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এত প্রতিমার কাটামো, খড় ও পুজোর সামগ্রী সম্পূর্ণ তুলে ফেলা সম্ভব হয়নি।
জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত ৩টে পর্যন্ত বিসর্জন হয়েছে। আমাদের কর্মীরা সারা রাত ধরে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। যে ঘাটগুলি সামান্য অপরিষ্কার ছিল, বুধবার রাতের মধ্যে সেগুলি যাতে পরিষ্কার হয়, তা দেখা হচ্ছে।’’