নদীগর্ভে ক্ষয়, বিপন্ন সেতু

আপাতদৃষ্টিতে কিছুই বোঝার উপায় নেই। কিন্তু গভীর জলের নীচে নিঃশব্দে ক্ষয়ে যাচ্ছে বালির দিকে নিবেদিতা সেতু স্তম্ভের চারপাশের বালি, পলি! বিপজ্জনক সেই গর্তের হদিস মিলতেই সতর্ক হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের এনে শুরু হয়েছে মেরামতি।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০১:২৭
Share:

সতর্কতা: বালির বস্তা ফেলে চলছে সেতু বাঁচানোর কাজ। শুক্রবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

আপাতদৃষ্টিতে কিছুই বোঝার উপায় নেই। কিন্তু গভীর জলের নীচে নিঃশব্দে ক্ষয়ে যাচ্ছে বালির দিকে নিবেদিতা সেতু স্তম্ভের চারপাশের বালি, পলি! বিপজ্জনক সেই গর্তের হদিস মিলতেই সতর্ক হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের এনে শুরু হয়েছে মেরামতি।

Advertisement

বালি ব্রিজের উপরে চাপ কমাতে দশ বছর আগে পুরনো ওই ব্রিজের পাশেই তৈরি হয় নতুন সেতু। সেই থেকেই ওই ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু টোলওয়ে সংস্থা। বালি ও দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে সংযোগকারী এই সেতুটির আটটি স্তম্ভ গঙ্গার মধ্যে। এর মধ্যে বালির দিকে দুই নম্বর স্তম্ভকে ঘিরেই দেখা দিয়েছে এই সমস্যা।

দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু টোলওয়ে সংস্থার কর্তারা জানান, বেশ কয়েক মাস আগে নিয়ম মাফিক সেতুর পরিকাঠামো ও নদীর সমীক্ষার সময়ে সমস্যাটি ধরা পরে। ‘ইকো ফাউন্ড’ নামক বিশেষ প্রযুক্তির পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায়, স্তম্ভের চারপাশে যে পলি ও বালির স্তর আছে, নদীর স্রোতের কারণে তা ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায় ৫০ মিটার এলাকা জুড়ে একটি গর্ত তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বিষয়টি নজরে আসতেই সতর্ক হয় টোলওয়ে সংস্থা। এক কর্তার কথায়, ‘‘এখন খুব বড় সমস্যা হবে না। কিন্তু বিদেশি যে সংস্থার উপরে আমরা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়।’’

টোলওয়ে সংস্থার সিওও প্রবীণ বসন্ত জানান, তিন-চার দিন ধরে ওই ক্ষয় মেরামতি চলছে। শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, ওই স্তম্ভের দু’পাশে বড় তিনটি বার্জ বসানো। সেখান থেকেই নাইলনের জালের মধ্যে ১০-১২টি বস্তায় সাদা বালি ভর্তি করে সেগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হচ্ছে। জলের নীচে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হচ্ছে, কতটা কাজ হল।

ক্যালিফোর্নিয়ার ওই সংস্থার এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এখনও হাতের বাইরে যায়নি। ক্ষয় আরও বাড়লে বড় সমস্যা হবে।’’

দীর্ঘ দিন বিদেশে কাজ করা সেতু বিশেষজ্ঞ অলোক সরকার বলেন, ‘‘স্তম্ভের উপরেই সেতুর পুরো ভারসাম্য নির্ভর করে। সেখানে ক্ষয় চিহ্নিত করা মাত্রই মেরামতি করা ঠিক সিদ্ধান্ত।’’

নদী বিশেষজ্ঞ তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘নদীর গতিপথে কংক্রিটের বাধা থাকলে সেটা টপকে স্রোত এগোতে পারে না। তখনই ওই বাধার আশপাশের বালি, পলিতে ক্ষয় তৈরি করে স্রোত এগিয়ে যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement