প্রতীকী ছবি।
বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক-আন্দোলনের জেরে কয়েক মাস আগে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল রিষড়ার জয়শ্রী টেক্সটাইল কারখানা। আন্দোলনকারী নয় শ্রমিক সাসপেন্ড হয়েছিলেন। পয়লা ডিসেম্বর ওই নয় শ্রমিককে বরখাস্ত করা নিয়ে ফের কারখানার অন্দরে শোরগোল পড়েছে। আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিক নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, ছাঁটাইয়ের মতো চরম পদক্ষেপ করে শ্রমিকদের পরিপন্থী কাজ করছেন মালিকপক্ষ। এ নিয়ে আগামী সোমবার শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে বৈঠক করবে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, হিংসা ছড়ানো, দুর্ব্যবহার, বেআইনি ধর্মঘটের মতো কাজ করেছেন ওই শ্রমিকেরা। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হয়েছে। তার পরেই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারখানার এক কর্তা বলেন, ‘‘দোষী প্রমাণিত হলেও বরখাস্ত করা যাবে না, এমন কথা দেওয়া হয়নি। দোষ গুরুতর। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত।’’
কারখানায় ৮টি শ্রমিক সংগঠন রয়েছে। তার মধ্যে সিটু, আইএনটিটিইউসি, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-সহ সাতটি শ্রমিক সংগঠন একযোগে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে। বুধবার তারা শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম-কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করেন। অপর শ্রমিক সংগঠন আইএফটিইউ বৃহস্পতিবার কারখানার গেটের সামনে অবস্থান করে।
দৈনিক ৬ টাকা বেতন বাড়ানোর দাবিতে গত মে মাসে কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। বিক্ষোভে তেতে হয়ে ওঠে কারখানা চত্বর। কারখানার এক অফিসার প্রহৃত হন। ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। ২৪ জন শ্রমিককে সাসপেন্ড করা হয়। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ১৫ জনকে কাজে ফিরিয়ে কারখানা চালু করা হলেও বাকি ন’জনের ‘সাসপেনশন’ তোলা হয়নি। গত ২২ মে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন শ্রমমন্ত্রী। সাসপেন্ডেড শ্রমিকদের ব্যাপারে ফয়সালা করতে এক মাস সময় ধার্য করেন তিনি।
শ্রমিক নেতাদের দাবি, বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সবাইকেই কাজে ফেরাতে হবে। মালিকপক্ষ সে কথা মেনেও নেন। কিন্তু ছ’মাস পেরিয়ে গেলেও তাঁরা প্রতিশ্রুতি রাখেননি। আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায় এবং আইএনটিইউসি নেতা অজিত চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘শ্রমমন্ত্রীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও মালিকপক্ষ মানছেন না। এটা অনৈতিক।’’ সিটু নেতা মণি পাল বলেন, ‘‘কারখানার ভিতরে শ্রমিকের বিরুদ্ধে তদন্ত তো একতরফা হয়। বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে মন্ত্রীর কাছে আমরা দরবার করব।’’ শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম-কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তী জানান, আগামী সোমবার মন্ত্রী শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন।