ছবি: সুব্রত জানা।
কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৪-’০৫ সালে। মাঝে দশটা বছর কেটে গেলেও আজও অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বাউড়িয়া কমিউনিটি হল নিয়ে এলাকা মানুষ হতাশা চেপে রাখতে পারেন না। তাঁদের আক্ষেপ, এক সময় এলাকার মানুষের সুবিধার্থে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য এই কমিউনিটি হল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল জেল প্রশাসন। অথচ এখন তা সমাজবিরোধীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রশাসনেরও এ দিকে কোনও নজর নেই।
উলুবেড়িয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের গোড়ায় বাউড়িয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন প্রায় পাঁচ কাঠা জমির উপর এই কমিউনিটি হলের পরিকল্পনা হয়েছিল। রাজ্যে তখন ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট সরকার। পুরবোর্ডও বামেদের। কেএমডিএর কাছে এই নিয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলে তারা তা অনুমোদন করে এবং কমিউনিটি হল তৈরিতে উদ্যোগী হয়। ২০০৪-’০৫ সাল নাগাদ কাজও শুরু হয়ে যায়। বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। কয়েক বছরের মধ্যে কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও সম্পূর্ণ হয়নি। এরপর ২০০৯ সালে বামেরা পুরসভা নির্বাচনে হেরে যায়। অভিযোগ, তার পর থেকেই কমিউনিটি হলের কাজের আর অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যে পুরসভায় কংগ্রেস এক বছর ও তৃণমূল পাঁচ বছরেরও বেশি সময় কাটালেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।
দিন কয়েক আগে গিয়ে দেখা গেল হলের বাইরের দিকের গেটে কোলাপসিবল গেট বসানো রয়েছে। উপরের অংশ খোলা। অযত্নে অবহেলায় পড়ে থেকে হলের দেওয়াল বেয়ে লতানো গাছ টিনের ছাদে উঠে গিয়েছে। হলের দু’দিকে রাস্তার দু’পাশ ঢেকেছে ঝোপঝাড়ে। হলের আশপাশে পড়ে ইট, বালি, স্টোনচিপ। এক ঝলক দেখলে মনে হবে ভুতুড়ে বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এ ভাবে পড়ে থাকার ফলে ওই জায়গা দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যার পর সেখানে চলে মদ, গাঁজার আসর। প্রশাসনের কোনও নজরদারি না থাকায় কমিউনিটি হলের বহু জিনিস চুরি হয়ে গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, হলটি তৈরি হয়ে গেলে সকলের সুবিধা হতো। সেইসঙ্গে পুরসভারও আয় বাড়ত।
উলুবে়ড়িয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা এটার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু তৃণমূল এসে সেটা সম্পূর্ণ করতেই পারল না। এটা দুঃখজনক।’’ যদিও হলটি সংস্কার করে নতুন রূপে সাজানোর আশ্বাস দিয়েছে পুরসভা। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের আব্বাসউদ্দিন খান বলেন, ‘‘এটি সংস্কারের জন্য একটা পরিকল্পনা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠনো হয়েছে। তাঁদের আশ্বাসও মিলেছে।’’