বেপরোয়া: উত্তর প্রসাদপুরে প্রতিমা নিরঞ্জনে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
ডিজে নিষিদ্ধ। করোনা আবহে বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও সম্মতি দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। হুগলির প্রায় সর্বত্র এ বার সেই নিষেধ মানা হলেও তাল কাটল তিনটি ক্ষেত্রে। একাদশীতে উত্তরপাড়া থানা এলাকার দু’টি পুজো কমিটি ডিজে বাজিয়ে বিসর্জন করতে যাওয়ায় ব্যবস্থা নিল পুলিশ। মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটটি ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দশমীর দিন একটি বিসর্জনের শোভাযাত্রাকে মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুমে পুলিশ ডিজে বরদাস্ত করবে না। আদালতের পাশাপাশি পরিবেশ আদালতেরও নির্দেশ রয়েছে। একটা ছোট এলাকায় প্রচণ্ড শব্দ হলে বিশেষত বয়স্কদের অসুবিধে হয়। এটা বোঝা উচিত প্রত্যেকের। পুলিশকে প্রতিটি ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে।’’
মঙ্গলবার, একাদশীর রাতে মাখলা গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকার একটি পুজো কমিটি ডিজে-সহ ভাসানের শোভাযাত্রা বের করে। এতে স্থানীয়দের অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। পুলিশ আসে। গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করা হয়।
মাখলা এলাকারই বাসিন্দা উত্তরপাড়ার পুরপ্রশাসক দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিটি পুজো কমিটিকে বার বার পুজোর গাইডলাইনের ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছিল। এরপরেও কী করে উদ্যোক্তারা এই রকম কাণ্ড ঘটালেন? পুলিশের কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’
চন্দননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা জানান, কোন্নগরের শকুনতলা কালীবাড়ি লাগোয়া এলাকার আর একটি পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা ওই রাতেই ডিজে বাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করে। পুলিশ সেখানে গিয়েও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। আটক করা হয় ডিজে বক্স।
দশমীর দিন উত্তরপাড়া স্টেশন লাগোয়া একটি পুজোর বিসর্জনে শোভাযাত্রা বের করা হয়। সেই শোভাযাত্রা কাছেই বাজারের মোড় ছাড়িয়ে কিছুটা চলেও আসে। খবর পেয়ে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে শোভাযাত্রা বন্ধ করে। পুজো উদ্যোক্তারা শুধু প্রতিমা নিয়ে গিয়ে গঙ্গায় ভাসান দেন।
ডিজে বন্ধের জন্য পরিবেশকর্মীরা চাইছেন, পুলিশ আরও কড়া হোক। পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু ডিজে বক্স আটক বা গ্রেফতার করলেই হবে না। পুলিশের উচিত ওই বক্স আর ব্যবসায়ীদের ফেরত না দেওয়া। তা হলেই বক্স ভাড়া দেওয়া বন্ধ হবে। পুজো উদ্যোক্তাদের অনুমতিও বাতিল করা উচিত। যে ক্লাব নিয়ম ভাঙল, তাদের নাম-ধাম দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়াও জরুরি। পর্ষদ দূষণ-মূল্য ধার্য করে ওইসব ক্লাবের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করবে। আগে এটা পর্ষদ করত।’’