গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
খোলা চুলে বসেছিলেন মোটরচালিত ভ্যানে। পাশেই রাখা ছিল জেনারেটর। চলছিল সেটি। তাতেই চুল জড়িয়ে খুলি উপড়ে গেল এক বধূর। হুগলির চণ্ডীতলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে গিয়ে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে ৩০ বছরের ওই মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম উজ্জ্বলা সাঁতরা। মঙ্গলবার রাতে স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে চণ্ডীতলার কলাছড়া এলাকায় জগদ্ধাত্রী প্রতিমার ভাসানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। উজ্জ্বলার স্বামী ঝন্টু সাঁতরার একটি মোটরচালিত ভ্যান রয়েছে। সেটি চালিয়ে তিনি চণ্ডীতলায় শোভাযাত্রায় এসেছিলেন। ভ্যানে বসেছিলেন স্ত্রী-পুত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, চণ্ডীতলার ধর্মতলা থেকে পালপাড়ার দিকে শোভাযাত্রা যখন এগোচ্ছিল, তখনই দুর্ঘটনাটি হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে ওঠেন সবাই। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘খোলা চুলে ভ্যানে বসেছিলেন ওই মহিলা। ভ্যানে একটি জেনারেটর ছিল। জেনারেটরের মোটরে মহিলার চুল আচমকাই আটকে যায়। চিৎকার শুনে তাকাতেই দেখি, ভ্যান থেকে ধপ করে রাস্তায় পড়ে গেলেন ওই মহিলা। মাথার খুলি উপড়ে গিয়েছিল তাঁর।’’
উজ্জ্বলার সঙ্গে ওই ভ্যানে ছিল তাঁর দু’বছরের ছেলে। বছর আটেকের মেয়ে বাবার সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছিল। মাকে ওই ভাবে পড়ে যেতে দেখে দুই খুদেই চিৎকার করে ওঠে। উজ্জ্বলার স্বামী ঝন্টু স্তম্ভিত হয়ে যান। তড়িঘড়ি স্ত্রীকে উদ্ধার করে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রীর। ঝন্টু কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ছোট ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে পারছিল না বলে আমিই ওকে বলেছিলাম, ‘ভ্যান গিয়ে বোসো’। সেই ভ্যানই প্রাণ কাড়ল আমার স্ত্রীর!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভ্যানে জেনারেটর ছিল। ওকে চুল বেঁধে নিতে বলা উচিত ছিল আমার। ভুল হল... বড় ভুল।’’ বলতে বলতে আবার কেঁদে ফেলেন ওই ঝন্টু। বধূর এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে উজ্জ্বলা সাঁতরা নামে ওই মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত হবে।