অসহনীয়: রাস্তায় জমে নোংরা জল। এ ভাবেই চলে যাতায়াত। প্রতিবাদে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের (ডান দিকে)। শুক্রবার, টিকিয়াপাড়ার নোনাপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়া পুরসভার ভাঁড়ারে টান। তাই জরুরি পরিষেবা দিতেই নাজেহাল অবস্থা হয় বলে অভিযোগ। সেখানে জমা জল ট্যাঙ্কারে তুলে তা ফেলা হবে অন্যত্র! এলাকায় পাম্প বসিয়ে জমা জল সরানো এ শহরে নতুন নয়। কিন্তু সেই জল কোথায় ফেলা হবে, তা নিয়ে মাঝেমধ্যেই গোলমাল হয়। তাই বলে পাম্প করে সরানো জল ট্যাঙ্কারে তুলে অন্যত্র ফেলার পরিকল্পনা! এ তো ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি!
যথারীতি কার্যত অসম্ভব ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই দাবি বাসিন্দাদের। যার জেরে মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে ফের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন টিকিয়াপাড়া এলাকার নোনাপাড়ার বাসিন্দারা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে স্থানীয় পুরুষ, মহিলা ও ছাত্রছাত্রীরা ওই অবরোধে শামিল হন। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক পরে বাসিন্দারা অবরোধ তুলে নেন। গত ২৭ অগস্ট নোনাপাড়াতেই রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তাঁরা।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই ফের জলবন্দি হয়ে যায় নোনাপাড়া। নর্দমার জল মিশে অলিগলি ডুবে গিয়েছে। অনেক বাড়িতে জল ঢুকে যায়। কিছু বাড়ির রান্নাঘরে নোংরা জল ঢুকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে আছে রান্নাবান্না। আগের বার বাসিন্দারা অবরোধ করলে পুরসভা জানিয়েছিল, পাম্প বসিয়ে বা জল পাম্প করে ট্যাঙ্কারে তুলে অন্যত্র ফেলে দেওয়া হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই কাজে কোনও আধিকারিককে এলাকায় দেখাই যায়নি! পাম্প চালিয়ে জল তোলাও হয়নি। বাসিন্দা সীমা প্রসাদ বলেন, ‘‘ছেলেময়েরা পড়তে যেতে পারছে না। ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে। পুরসভা বলছে, কাল জল তোলা হবে, পাম্প বসানো হবে। সেই ‘কাল’ আর আসছে না।’’
পুরসভার অবশ্য দাবি, এলাকায় পাম্প বসানো হয়েছে। জল বার করা হচ্ছে। তবে জল বেরোচ্ছে না কেন? এ বার পুরসভার যুক্তি, নিকাশিনালা রুদ্ধ থাকায় সেই জল পিছনে চলে আসছে। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলেছি নোনাপাড়ায় জল সরাতে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নিতে। ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছে। আমি পরিস্থিতি দেখতে নোনাপাড়ায় যাব।’’ এলাকা থেকে জল না বেরোনো নিয়ে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের যুক্তি, ওই এলাকার জল ভাগাড়ের নিকাশিনালা দিয়ে বেরোয়। ধস নেমে তা বুজে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া অক্সিডেশন পন্ড থেকেও এ বার পলি তোলা হয়নি।