ট্রেন মেরামতির কাজ করছেন রেলকর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যস্ত সময়ে ফের হাওড়া-আমতা শাখায় ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত। মঙ্গলবার সকালে একটি ডাউন আমতা-হাওড়া লোকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। তার জেরে বাঁকরা নয়াবাজ স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি। ওই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে একের পর এক ট্রেন। অফিস টাইমে চরম নাজেহাল হতে হয় যাত্রীদের।
রেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে চাকায় এবং ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি নজরে আসায় ট্রেন দাঁড় করিয়ে দিতে বাধ্য হন চালক। তিনি খবর দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। বেশ কিছুক্ষণ পর ট্রেনটিকে খালি করে দেওয়া হয়। সাময়িক ভাবে স্তব্ধ হয়ে যায় ডাউন লাইনের পরিষেবা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রেলকর্মী এবং আধিকারিকরা। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করার পর স্টেশন থেকে রেকটিকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অফিস টাইমে লোকাল বিভ্রাটের কারণে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বাঁকরা নয়াবাজ স্টেশনেই অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় ওই লোকালের যাত্রীদের। অনেকেই সময়মতো অফিস পৌঁছতে না পেরে আপ লাইনের ট্রেন ধরেন। কেউ কেউ আবার বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। লাইন ধরে হেঁটে পৌঁছে যান সাঁতরাগাছি স্টেশনে। সেখানে থেকে আবার অন্য ট্রেন ধরে হাওড়া পৌঁছন।
পলাশ দীর্ঘাঙ্গী নামে এক যাত্রীর অভিযোগ, ‘‘এই লাইনে এমন সমস্যা প্রায় প্ৰতিদিনই। দেরিতে ট্রেন চলে। কাজে যেতে তাই প্রচুর সমস্যা হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার ট্রেন বিভ্রাটের কারণে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এক দিনের মাইনে কাটা যাবে।’’ দেরিতে ট্রেন চলাচল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শেখ শহিদুল নামে অন্য এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘‘শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরতে প্রায় রোজই রাত একটা বেজে যায়।’’
কী কারণে যান্ত্রিক ত্রুটি তা খতিয়ে দেখছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বপন দত্ত জানিয়েছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটি আটকে যায়। অন্য ট্রেনে করে যাত্রীদেরকে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা করানো হয়েছে। রেল ইঞ্জিনিয়ারেরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। ঘটনার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই বড়গাছিয়া স্টেশনের কাছে রেলের ওভারহেড তারের উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ে হাওড়া-আমতা শাখার ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটায় সে দিনই টিকিয়াপাড়া স্টেশনে রেল অবরোধ করে যাত্রীদের একাংশ। রেল লাইনে বসে পড়েন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এমন সমস্যা চলছে। ঠিক সময়ে ট্রেন পাওয়া যায় না। ট্রেন পেলেও তা দেরিতে চলে।’’ শেষ পর্যন্ত রেলের থেকে লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পরেই বিক্ষোভ তোলেন তাঁরা।